|
|
|
|
হুল্লোড় |
বলিউডে আজ গান চলে গায়করা চলে না |
‘আশিকি ২’তে কুমার শানুকে দিয়ে গাওয়াবেন কি না ঠিক করেননি। সেরা সুরটা আজও
নিজের জন্য রাখছেন বলে আক্ষেপ নেই তাঁর। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায় |
শুনলাম কিছু এয়ারলাইনস না কি আপনাকে তাঁদের ব্র্যান্ড অ্যামবাসাডর বানাতে চান?
আমাকে? কই, না তো!
সে কি! আপনার থেকে বেশি মুম্বই-কলকাতা তো পাইলট আর এয়ার হোস্টেস ছাড়া কেউ করে না!
(হেসে) এই গুগলিটা ধরতে পারিনি একদম! সত্যি, অসম্ভব ট্র্যাভেল করি। এনজয়ও করি সেটা। এখন মুম্বই আমার কলকাতারই একটা এক্সটেনশন। দূরত্বটাকে আর দূরত্ব বলে মনেই হয় না।
মুম্বইতে হঠাৎ করে আপনি দারুণ দারুণ কাজ করছেন....
হ্যাঁ, ‘আশিকি ২’-তে কাজ করছি। মিঠুনদার ছেলে মিমোর ছবি ‘রকি’ আছে। আরও অনেকগুলো বড় প্রজেক্ট আছে। বিরাট ব্যানারে...
‘আশিকি ২’-তে কুমার শানুকে দিয়ে গাওয়াবেন তো?
দেখুন, ‘আশিকি ২’ মহেশ ভট্ট, মুকেশ ভট্ট, ভূষণ কুমারের অসম্ভব প্রিয় প্রজেক্ট। কে গান গাইবেন সেটার একটা ইনপুট ওঁদের কাছ থেকেও আসবে।
হ্যাঁ, কিন্তু আপনি তো সঙ্গীত পরিচালক? আজও লোকে পুরোনো ‘আশিকি’-র গান শোনে কুমার শানুর জন্য। তাঁকে দিয়ে আর গাওয়াবেন না?
দেখুন, আজকের বলিউডে গানটাই মুখ্য। গায়ক নয়। আমাদের হাতেও করার মতো কিছু নেই।
তাই জন্যেই কি সোনু, শান, উদিতজি, কুমার শানুর বদলে এমন কিছু গায়ককে দিয়ে গাওয়াচ্ছেন যাঁদের নাম কেউ বলতে পারবে না?
একটা প্যাটার্ন যে বদলে গিয়েছে সেটা আমি অস্বীকার করব না।
এখন তো সঙ্গীত পরিচালকরাও গান গাইছেন। বিশাল-শেখর ও নিজেরা গান গাইছেন। এটা একটা পর্যায়। সাময়িক।
সোনু নিগম আমাকে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তাঁর কাজ নেই, কারণ সঙ্গীত পরিচালকরা নিজেরাই গাইছেন যাতে শো করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
জানি না সোনু কেন এ রকম বলল! কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়।
অর্ধেক সত্যি তো বটেই। আপনিও তো বাংলায় যে ফিল্মে সুর দিচ্ছেন, তাতে সব চেয়ে ভাল সুরটা নিজের জন্য রাখছেন। যাতে শো পেতে পারেন?
দেখুন, পঞ্চমদা বহু দিন নিজের শো-তে নিজের গান গেয়েছেন। বাপিদাও তাই। শুধু শুধু আমাকে একা দায়ী করে তো লাভ নেই! |
|
কিন্তু আপনি তো নতুন গায়কদের দিয়ে বেশি গাওয়াচ্ছেনই না?
কে বলল আপনাকে? বাজে কথা। যে গানে নচিদাকে দরকার হবে, আমার সেই গান নচিদাই গাইবে। যে গান রূপম কী রাঘব কী রূপঙ্কর-এর জন্য হবে, সেগুলো তারাই গাইবে। আর শো-তে আমি শুধু নিজের গাওয়া
গান গাই না! অন্য গায়কদের গাওয়া গানও গাই। আর গাইব নাই বা কেন! ওই গানগুলোর সুরকার তো আমি। আমার গাইতে অসুবিধে কোথায়?
আজকের বাংলা ছবি নিয়ে এত হই-চই! অনেকেই বলে জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তাতে বিরাট অবদান। মানেন সেটা?
হ্যাঁ, অবদান তো একটা আছেই। কিন্তু জার্নিটা সহজ ছিল না। ২০০৪-এ শ্রীকান্তদা যখন আমাকে বাংলা ছবির মিউজিক দেওয়ার জন্য বলেন, তখন ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলা ছবি নিয়ে এত সদর্থক মনোভাব ছিল না। বাংলা সিনেমার
গান তো লোকে শুনতই না! সেই সময়টা ছিল বাংলা গানের পক্ষে ‘অন্ধকার’ একটা সময়।
কিন্তু শ্রীকান্তদা, মণিদা, রানে, সবাই মিলে আমাকে যে উৎসাহটা দিয়েছেন তখন, তাতে একদিনের জন্যও অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলিনি। আজ তার ফল আমরা সবাই পাচ্ছি। আজ হিন্দিতে বড় ছবি করছি আমি। কিন্তু বাংলা ছবিই সব সময় অগ্রাধিকার পাবে আমার কাছে। এখানে যে ভালবাসা পেয়েছি, তা আর কোথাও পাব না।
আর আমার শো নিয়ে বলছিলেন না? জানেন আজকাল শো-তে কী হয়?
কী হয়?
আগে শো শুরু হলে বাংলা গান আগে হত। প্রথম আধ ঘণ্টা নমো নমো করে বাংলা গান করেই সবাই অপেক্ষা করত হিন্দি গান গাইবে বলে। আজ আমার শো-তে আগে হিন্দি গান হয় নমো নমো করে। তার পর বাংলা গান। এটাই পার্থক্য।
সাক্ষাৎকারের শুরুতে আপনার ট্র্যাভেল নিয়ে মজা করছিলাম। কিন্তু অতিরিক্ত ঘুরে বেড়ানোর জন্য আপনার শরীরও তো খারাপ হয়?
হ্যাঁ, ট্র্যাভেলের থেকেও বেশি শরীর খারাপ হয় তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য। এয়ারপোর্ট, প্লেন। নেমেই গরম। তার পর এসি। এগুলোই কারণ। তবে আজ আমি ১০০ শতাংশ ফিট।
আপনি বাংলা ছবির গানে একটা সদর্থক পরিবর্তন এনেছেন এটা সত্যি। কিন্তু আজ তো অনুপম রায় বা ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তও খুব কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলেছেন আপনাকে?
দেখুন, সবাই ভাল কাজ করছে। আর এখন এত কাজ! সবাই ভাল কাজ দেখানোর চেষ্টাও করছে। অনুপমের একটা স্টাইল আছে। ইন্দ্রদীপেরও তাই। অনুপম, ইন্দ্রদীপকে তবু লোকে চেনে। জানে। এমন অনেক সঙ্গীত পরিচালক আছেন যাঁদের নিয়ে বিশেষ লেখা হয় না। যেমন প্রবুদ্ধ দাশগুপ্ত, আমার খুব প্রিয় সঙ্গীত পরিচালক।
কিন্তু কখনও ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ শুনে মনে হয় না, ইস্, এই গানটা যদি আমি বানাতে পারতাম?
না না। একদমই নয়। আমার স্টাইলটাই ওটা নয়। গানটা অনুপম নিজের স্টাইলে গেয়েছে।
শেষ প্রশ্ন। ‘বরফি’ ছবিতে প্রীতম চক্রবর্তী এত ভাল সঙ্গীত পরিচালনা করলেন! ‘বরফি’-র গান শোনার পর অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ওঁকে?
নাহ্। আমাদের তো কথা হয় না।
তবে আমরা দু’জনেই দু’জনের ওয়েল উইশার। |
|
|
|
|
|