|
|
|
|
আগুন কেড়েছে মিঠুনকে, জানতেন না অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী |
সুব্রত গুহ • কাঁথি |
কলকাতার সূর্য সেন বাজারের বিধ্বংসী আগুনের কথা টিভি চ্যানেলের সুবাদে তখন ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু সেই আগুনই যে কেড়ে নিয়েছে তাঁদের ছেলে মিঠুন জানাকে (২৮) তা জানতেন না মুরারি জানা ও দীপান্বিতাদেবী। মিঠুনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নমিতাও দুপুর পর্যন্ত আগুনের কথা জানতেন না। আগন্তুক সাংবাদিকদের কাছেই তাঁরা শুনলেন সেই দুঃসংবাদ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি-১ নম্বর ব্লকের হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একতারপুর উগ্রসেনবাড় গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন জানা (২৮)। বছর দশেক ধরেই তিনি চাকরি করতেন কলকাতার একটি বেসরকারি মার্কেটিং সংস্থায়। মিঠুনের কাকা অধীর জানার সব্জি বীজের দোকান রয়েছে সূর্য সেন বাজারের একতলায়। আর ওই বাজারেরই দোতলায় একটা ঘরে থাকতেন মিঠুন। আট বছর আগে কলকাতার বাগুইহাটির বাসিন্দা নমিতার সঙ্গে মিঠুনের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের ছয় বছরের এক মেয়ে রয়েছে, নাম তৃষা। নমিতা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মিঠুনের আরেক ভাই অমিত মুম্বইয়ের একটি হোটেলে চাকরি করে। |
|
কান্নায় আকুল স্বামীহারা নমিতা। পিছনে ছোট্ট তৃষা। —নিজস্ব চিত্র। |
পঞ্চায়েত সদস্য কবীর খান ও হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গৌতম জানার কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর কথা জেনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুরারীবাবু। মিঠুনের মা দীপান্বিতাদেবী বলেন, “গত কাল রাতেও মিঠুনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। বলল, শরীর ভাল নেই। তাই ডাল ভাত রান্না করে খেয়ে শুয়ে পড়ব।” স্ত্রী নমিতা বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছেন। ছোট্ট তৃষা জানায়, এই সরস্বতী পুজোয় তার বাবা তাকে একটা শাড়ি কিনে দিয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকায় হাসিখুশি ছেলে হিসাবেই পরিচিত ছিল মিঠুন। কারও সঙ্গে তার কোনও বিরোধ ছিল না। প্রতি সপ্তাহের শনিবার সে বাড়িতে আসত আর সোমবার কাজে বেড়িয়ে যেত। গত শনিবারে বাড়ি ফিরে সে স্থানীয় এলাকার একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতাতে যোগ দিয়েছিল। বুধবার কলকাতার হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর মিঠুনের দেহ কাঁথিতে পাঠানো হয়। |
|
|
|
|
|