এক জনের জন্য রবিবার মাঠে একটা আলাদা ক্যামেরাই বরাদ্দ থাকছে। অন্য জনের বদরাগী ভাবমূর্তি দারুণ মনে ধরেছে ফরাসিদের। প্রথম জনকে জনতা আদরের নাম দিয়েছে ‘দেবদূত’। অন্য জনকে ভালবেসে ডাকা হচ্ছে ‘শয়তান’ বলে। আর এই ‘দেবদূত বনাম শয়তান’ নিয়ে উৎসাহের পারদ এতটাই চড়া যে, তা ফুটবল মাঠে ফ্রান্সের রবিবাসরীয় গৃহযুদ্ধ, প্যারিস সাঁ জাঁ বনাম মার্সেইকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে !
‘দেবদূত’ ডেভিড বেকহ্যাম এবং ‘শয়তান’ জোয়ি বার্টন রবিবার মাঠে যেমনই খেলুন, ফরাসি ডার্বির আগের দিন অন্য সব ছাপিয়ে এই দুই ব্রিটিশ তারকাকে নিয়ে জমেছে যত আলোচনা। টেলিভিশনে তাঁরা, খবরের কাগজেও তাঁদের দু’জনকে নিয়ে গ্রাফিক্স, ফুটবলপ্রেমীদের আড্ডাতেও সেই ‘দেবদূত বনাম শয়তান’। এই নামকরণ দু’টো নিয়ে ব্যাখ্যা খুঁজতে গিয়ে মজার গল্প শোনা যাচ্ছে। ফ্রান্স ফুটবল পত্রিকার সাংবাদিক ফিলিপে অক্লেয়ার যেমন বলছেন, “বেকহ্যামকে নিয়ে ফ্রান্সে যেটা হচ্ছে সেটা পুরোপুরি পাগলামি। শুধু বেকহ্যামের খবর সংগ্রহ করার জন্যই আলাদা করে কর্মী নিযোগ করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।” অক্লেয়ার জানিয়েছেন, রবিবারের ডার্বি দেখানোর জন্য মাঠে বসেছে চল্লিশটি ক্যামেরা। যার একটার নামই দেওয়া হয়েছে বেক -ক্যাম। ওই ক্যামেরা শুধুই বেকহ্যামকে দেখাবে। আসলে প্যারিস সাঁ জাঁ -র হয়ে খেলার জন্য বেকহ্যাম কোনও টাকা নিচ্ছেন না। |
যা বেতন পাচ্ছেন, সবটাই তিনি চ্যারিটিতে দান করছেন। বুঝতে অসুবিধা নেই সাঁইত্রিশের বেকহ্যাম কেন ‘দেবদূত’।
তুলনায় দুষ্টু তিরিশ বছরের জোয়ি বার্টন। তাঁর ফ্রান্সে খেলতে আসার সঙ্গে কল্যাণমূলক কাজকর্মের দূর দূর তক কোনও ওয়াস্তা নেই। কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের হয়ে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বিরুদ্ধে খেলতে নেমে হিংসাত্মক আচরণের জন্য বারো ম্যাচ সাসপেন্ড হয়ে ইংল্যান্ড ছেড়েছেন তিনি। মার্সেইয়ের হয়ে নেমে ইতিমধ্যেই এ মরসুমে একটা লাল কার্ড দেখা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দলে বেশ জাঁকিয়ে বসেছেন। বলা হচ্ছে মার্সেইয়ের মাঝমাঠে একটা ইস্পাত -কাঠিন্য আর নেতৃত্ব নিয়ে এসেছেন বার্টন। আর তাঁর গুন্ডা -গুন্ডা ব্যাপারটাই নাকি সবথেকে মনে ধরেছে মার্সেই সমর্থকদের। অক্লেয়ারের কথায়, “ভেলোড্রোমে অনেক ব্যাড বয় -রা খেলা দেখতে আসে। আর জোয়ি ওদের কাছে আপনজনের মতো।”
প্রাক্তন চেলসি কোচ কার্লো আনসেলোত্তির প্যারিস সাঁ জাঁ তৃতীয় স্থানে থাকা মার্সেইয়ের থেকে লিগ টেবিলে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে এবং ১৯৯৪ -এর পর আবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশায়। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রবিবারের ম্যাচটা বেকহ্যামের তুলনায় বার্টনের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বার্টনের ইংল্যান্ডে ফেরার উপায় নেই। বেকহ্যামের তেমন কোনও চাপ নেই। কাল যে মাঠে না নামলেও আলাদা ক্যামেরা থাকছে তাঁর জন্য ! |