কর্তাদের নজিরবিহীন ক্ষোভের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন অলোক মুখোপাধ্যায়। রাতে তিনি ক্লাব সভাপতি সুলতান আহমেদকে ফ্যাক্স পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, দলের হারের দায় নিয়ে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন।
অলোকের সরে যাওয়াটা অবশ্য অত সহজে হয়নি। প্রায় চার ঘণ্টা নানা নাটকের পর মহমেডান কোচ বুঝে যান, তিনি না সরে দাঁড়ালে অপমানিত হতে হবে। তবে ইস্টবেঙ্গলের কাছে হাফ ডজন গোল খাওয়ার পরও অলোক অনড় ছিলেন। ম্যাচের পর মহমেডান কোচ জানিয়ে দিয়েছিলেন, “আমি পদত্যাগ করছি না। তবে কর্তারা সরিয়ে দিলে সরে দাঁড়াব।” তাঁর এই মনোভাব দেখে মহমেডান ড্রেসিংরুমে কার্যত ঝড় ওঠে। ফুটবল দলের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ফুটবল সচিব ইকবাল আহমেদ ও মাঠ-সচিব কামারুদ্দিন এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে প্রকাশ্যেই বলে দেন, “কোচ না সরলে আমরা আর মাঠে আসব না। আমরা পদত্যাগ করব।’’ সোমবার অনুশীলনে নামলে কোচকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হবে সেটাও ঠিক করে ফেলেন দলের কিছু সমর্থক। এ সব খবর কোচের কানেও পৌঁছায়। এর পরই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ক্লাব বন্ধ থাকায় প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ফ্যাক্সেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন অলোক।
এর আগেও অলোক পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছিলেন ক্লাবকে। কর্তারাও নতুন কোচের খোঁজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মহমেডান প্রেসিডেন্ট সুলতান তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় সে যাত্রায় চাকরি বেঁচে যায় অলোকের। এ বার অবশ্য নতুন কোচই আসছেন মহমেডানে। এক কর্তা তো পরিষ্কার জানিয়ে দেন, “ওকে ফেরার আর কোনও সুযোগই দেব না এ বার।” সামনেই আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের খেলা রয়েছে কিংশুক, অসীমদের। ফলে সোমবার অথবা মঙ্গলবারের মধ্যেই নতুন কোচ বাছতে চাইছেন ক্লাব-কর্তারা। শোনা যাচ্ছে অনেক নাম। তবে কর্তারা চাইছেন একজন অভিজ্ঞ কাউকে।
এ দিকে ম্যাচের পর মহমেডান তাঁবু ছিল রীতিমতো অগ্নিগর্ভ। মাঠে এ দিন খুব বেশি সাদা-কালো সমর্থক আসেননি। ফলে বাইরে বিক্ষোভের চেয়ে ড্রেসিংরুমের ভেতরের ঝামেলাই ছিল বেশি। কর্তারা কোচের সঙ্গে কোনও কথাই বলছিলেন না। এর মধ্যেই ফুটবলারদের নিয়ে আলোচনায় বসে অলোক জানিয়ে দিয়েছিলেন সোমবার কখন প্র্যাকটিস রয়েছে। বাইরে এসে সাংবাদিকদের বলে দেন, “রক্ষণের দোষেই আমরা গোল খেয়েছি। প্রয়াগের বিরুদ্ধে এত ভাল খেললাম, আর আজ টিম এত খারাপ খেলল কীভাবে বুঝতে পারছি না।”
তবে ফুটবলারদের ওপর দোষ চাপিয়েও আর শেষ রক্ষা করতে পারলেন না অলোক। সেই সরতেই হল তাঁকে। |