|
|
|
|
|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
১৭ ফেব্রুয়ারি - ২৩ ফেব্রুয়ারি |
|
ধ্বংস চলছে, চলবে... |
• দামাস্কাস • জায়গার নাম আলেপ্পো। সময়, গত বৃহস্পতিবার নিশুতি রাত। গ্রামাঞ্চল। চার দিকে চাষের জমি। এক দিকে সার দিয়ে ছোট ছোট বাড়ি। হঠাৎই সেখানে উড়ে এল তিনটি ভয়ঙ্কর মিসাইল রকেট। প্রবল বিস্ফোরণের মধ্যে জেগে উঠল সারা দেশ, দেখল একটি রকেটের তলায় চাপা পড়েছে প্রায় তিরিশটি বাড়ি অর্থাৎ তিরিশটি ঘুমন্ত পরিবার, অন্য রকেটের জেরেও হতাহত প্রচুর। এই নিয়ে সত্তর হাজার ছাড়িয়ে গেল গত দুই বছরের সংঘর্ষে নিহত সিরীয়ের সংখ্যা।
বস্তুত, গত দুই বছর ধরে প্রতি দিনই বিশ্বের সব কাগজের হেডলাইন হওয়া উচিত ছিল: সিরিয়া। সহজবোধ্য কারণেই তা হয়নি, হতে পারে না। কিন্তু সে দেশে যে ধ্বংসকাণ্ড প্রত্যহ ঘটে চলেছে, বিশ্বের প্রধান দেশগুলি সেটা মাথায় রাখছে কি না বোঝার উপায় নেই। লিবিয়ার মতো সেখানে পশ্চিমি অভিযান পাঠানো কঠিন: সে দেশের সমাজে বিভাজন অনেক তীব্র, এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে অনেক বেশি যুক্ত। |
|
সিরিয়া ও ইরান, দুই দেশের শিয়া সম্প্রদায় ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়ে সিরিয়ার শিয়া স্বার্থে ঘা দেওয়ার অর্থ ইরানকেও সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলা। আরও মুশকিল, সিরিয়ার ভাণ্ডারে আছে ‘ওয়েপনস অব মাস ডেসট্রাকশন’, ভুলভাল পদক্ষেপে সহজেই তা বিপজ্জনক হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা।
বাইরের দেশগুলি সহজে নাক গলাবে না বুঝে নিয়ে প্রেসিডেন্ট আসাদ প্রথম থেকেই তাঁর বিরুদ্ধ পক্ষের মধ্যে একটা শিয়া-সুন্নি বিভাজন ঘটিয়ে দিয়েছেন। এখন সে দেশের সাধারণ শিয়ারাও মনে করে, তারা বিদ্রোহীদের সমর্থন করলে ধর্মেকর্মে মারা পড়বে, প্রেসিডেন্ট আসাদই একমাত্র ভরসা। আসাদ প্রথমাবধি ট্যাঙ্ক আর মিসাইল ব্যবহার করে নিরস্ত্র বিদ্রোহীদের বাধ্য করেছেন সহিংস ও সশস্ত্র ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে। যে হিংসারাক্ষস এখন সেখানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যে গোষ্ঠীযুদ্ধ দেশ ছেয়ে ফেলছে, তাতে আরও কত বছর পর রক্তবন্যা থামবে, সেটাই বড় প্রশ্ন।
|
হয় হয়! zানতি পারো না! |
• লন্ডন • একের পর এক কেলেঙ্কারি। এই সপ্তাহে ব্রিটেনে আরও দুটি বড় কোম্পানির খাবারের মধ্যেও গোমাংসের জায়গায় ঘোড়ার মাংস পাওয়া গেল। একটি কোম্পানির নাম নানাবিধ খাদ্যবস্তুর জন্য প্রিয় ব্র্যান্ড হিসেবে অতিপরিচিত। আর একটি, ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় কেটারিং কোম্পানি, অধিকাংশ স্কুল কলেজ লাইব্রেরি সৈনিক-স্কুল কেয়ার-হোম-এর ক্যান্টিনে যারা খাবার পাঠায়। |
|
কিছু দিন আগেই ধরা পড়েছে, বড় বড় দোকানের ফ্রোজেন ফুড সেকশনে যত বিফ প্রডাক্ট, অর্থাৎ বার্গার, পিৎজা, স্যান্ডউইচ, প্যাটি, স্টেক, সব কিছুর মধ্যেই, আশ্চর্য, গরুর বদলে ঘোড়ার মাংস! কেহ বা কাহারা চুপিসাড়ে ‘বিফ’ নামে ঘোড়ার মাংস সরবরাহ করছে। ঘোড়ার মাংসের বিপদ কী? ঘোড়াদের যে হেতু জন্মাবধি বহু ওষুধবিষুধ খাওয়ানো হয়, সেই ওষুধ মানুষের শরীরে ঢুকলে ভয়াবহ রকমের জানা-অজানা ব্যাধি ঘটতে পারে।
|
নজরবন্দি
|
বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা, অভিযুক্তকে যদি জামিন দেওয়া হয়, তবে কি দেশ জুড়ে প্রবল প্রতিক্রিয়া হবে?’ আইনজীবীর উত্তর, ‘জামিন না দিলে আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে!’ সেই আশঙ্কাতেই হয়তো, অভিযুক্তকে শেষ পর্যন্ত জামিনই দেওয়া হল। অভিযুক্তের নাম অস্কার পিস্টোরিয়াস দক্ষিণ আফ্রিকার সেই প্রতিবন্ধী অ্যাথলিট, যিনি অলিম্পিকে দৌড়ে দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের তকমা প্রায় পেয়েই গিয়েছেন। তাঁর ভক্তের সংখ্যা বিপুল আরও বিপুল তাঁর পিছনে থাকা আর্থিক স্বার্থের পরিমাণ। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর তিনি বহু কোটি ডলারের ‘পণ্য’। নিজের বান্ধবী রিভা স্টিনক্যাম্পকে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগে আপাতত বিচারাধীন।
জামিন পাওয়ামাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মানবাধিকার সংস্থা এবং নারী-অধিকার গোষ্ঠীগুলি, এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। এত বড় অপরাধ করেও এত সহজে জামিন মিলল তাঁর সেলেব্রিটি স্টেটাসের কারণেই, মনে করা হচ্ছে। যে কোনও দেশেই সেলেব্রিটির বিচার একটি জটিল জিনিস। তার উপর পিস্টোরিয়াসের পিছনে রয়েছে নানা বহুজাতিক সংস্থার জোর, সেরা জনসংযোগ সংস্থার ২৪X৭ পরিষেবা এবং বিপুল সমর্থকের শক্তি। অবশ্য তা সত্ত্বেও তিনি বিনা বাধায় মামলা জিততে পারবেন না। তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে মানবাধিকার সংস্থা ও নারীবাদী সংগঠনগুলি জটিল লড়াই-এর শপথ নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় নারী-ঘটিত অপরাধের মাত্রা এতটাই বেশি যে পিস্টোরিয়াসের মামলার যথার্থ সুবিচার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন তাঁরা। এ দিকে এরই মধ্যে মামলার প্রধান তদন্তকারী অফিসার হিলটন বোথাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে তামাদি হয়ে যাওয়া এক খুনের মামলা অতীত খুঁড়ে তুলে এনে। কেন, অনুমান করা কঠিন নয়।
দেখা যাক, অর্থ, খ্যাতি, প্রতিপত্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে আইন কত দূর কী করতে পারে। |
|
|
|
|
|