সাব ইনস্পেক্টর তাপস চৌধুরী খুনের মামলায় অভিযুক্ত গার্ডেনরিচের তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইকবাল এখনও অধরা। তবে তাঁর আরও দুই সঙ্গীকে পুলিশ শনিবার বন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম আসলাম বাবা ওরফে মহম্মদ আসলাম ও মহম্মদ মুস্তাফা। তাদের বিরুদ্ধে জানুয়ারিতে অন্য এক ঘটনায় পুলিশকে মারধরের অভিযোগ এনেছে গার্ডেনরিচ থানা। তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, তাপস চৌধুরী খুনের দিন তারা হরিমোহন ঘোষ কলেজের সামনে হাজির ছিল। আসলামদের জেরা করে তাদের নেতা ইকবাল সম্পর্কে কিছু তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছে সিআইডি।
ইকবালের পাশাপাশি বন্দরের কংগ্রেস নেতা মোক্তারেরও খোঁজ করছে পুলিশ। সরকারি সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে তাঁর দেওয়ানবাগানের বাড়িতে হানা দেয় সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের একটি দল। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মোক্তারের পরিবারের আট সদস্যকে। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে তাঁর সঙ্গে পরিবারের কোনও যোগাযোগ নেই বলে মোক্তারের স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যে ঘটনায় আসলামদের গ্রেফতার করা হয়েছে সেটি ঘটে ৮ জানুয়ারি। বন্দর এলাকায় একটি বেআইনি বহুতল তৈরির তদন্তে গিয়ে মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার উপস্থিতিতে ১৫ নম্বর বরো অফিসের ভিতরেই নিগৃহীত হন সৌরভ ঘোষ নামে এক সাব ইনস্পেক্টর। হেনস্থা করা হয় তাঁর একাধিক সঙ্গীকেও। অভিযোগ, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তখনও বরো অফিসে এসে পুলিশের পাশে না দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদেরই পাশে দাঁড়ান। পশ্চিম বন্দর থানার ওসি এবং তাঁর সহকর্মীদের হুমকি দিয়ে বলেন, “মুন্না শুধু কাউন্সিলর নন, বরো চেয়ারম্যানও। তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করলে মুন্নার বাড়িতে সান্ত্রীর কাজ করানো হবে। তখন মুন্নাকে স্যালুট করতে হবে পুলিশকেই।” এ সব শুনে তখনকার মতো খালি হাতে ফিরে আসতে হয় পুলিশকে। পরে ওই ঘটনায় কয়েক জন ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে পশ্চিম বন্দর থানায় এফআইআর করেন সৌরভবাবু। অভিযোগ, তাঁদের বরো অফিসের ভিতরে আটকে রাখার কথাও বলা হয়। এক পুলিশকর্তা বলেন, “ওই ঘটনায় আসলামদের চিহ্নিত করা গেলেও রাজনৈতিক চাপে তখন তাদের নাম এফআইআরে লেখা যায়নি। ওই মামলাতেই আসলাম ও মুস্তাফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
সিআইডি জানিয়েছে, তাপস চৌধুরী খুনের দিন যে হেতু ওই দু’জন ঘটনাস্থলে ছিল, তাই তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র তোলার দিন কেন তারা কলেজের সামনে গিয়েছিল, কে তাদের সেখানে যেতে বলেছিল, তা জানতে চেয়ে এ দিনই সিআইডি গার্ডেনরিচ থানায় গিয়ে ধৃতদের জেরা করে। তবে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত শেখ সুহানের লাল-কালো ডোরাকাটা জামাটি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। জেরায় সে দাবি করেছে, পুলিশি ধরপাকড় থেকে বাঁচতে ঘটনার পর তার বন্ধুরা জামাটি ছিঁড়ে ফেলে। পুলিশ অবশ্য সুহানের কথা বিশ্বাস করছে না। |