দক্ষিণ কলকাতা
সুরাহা অধরাই
এ ভাবেই যাতায়াত
দলেছে অনেক কিছুই। কিন্তু কিছুতেই বদলাচ্ছে না অছিপুর ফেরিঘাটের অবস্থা। অথচ এই ঘাট দিয়েই নিত্য দিন যাতায়াত করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলার কয়েক হাজার মানুষ। নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পথে চরম দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করাটাই তাঁদের রোজনামচা হয়ে উঠেছে।
হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া সংলগ্ন এলাকার বহু বাসিন্দা সহজে কলকাতা পৌঁছনোর জন্য অছিপুর ফেরিঘাট ব্যবহার করেন। অনেকে আবার নৌকোয় সাইকেল নিয়ে এসে বজবজ, মহেশতলা, নুঙ্গি, গার্ডেনরিচ, চড়িয়াল এবং বেহালা সংলগ্ন এলাকায় কাজে যান। আবার এ পার থেকেও বহু মানুষ ওই ঘাট দিয়ে হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, নৌকো থেকে নেমে অনেকটা রাস্তা জল, কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে তার পরে পাকা রাস্তায় উঠতে হয়। যাঁরা সাইকেল ব্যবহার করেন তাঁরা সাইকেল কাঁধে তুলে নিয়ে এই কাদা রাস্তা পেরোন। এই পথেই রোজ যাতায়াত করেন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা নুরুল হুদা। তাঁর কথায়: “অছিপুরে পাকা রাস্তায় ওঠার পরে রোজ টিউবওয়েলের জলে পায়ের কাদা পরিষ্কার করতে হয়। তার পরে কর্মস্থলের দিকে রওনা দিই।”
নিত্যযাত্রীদের আরও অভিযোগ, ফেরিঘাটের সমস্যার পাশাপাশি যানবাহনও এখানে একটা বড় সমস্যা। ফেরিঘাট থেকে বেড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও তারাতলা যাওয়ার বাস মেলে না। তাই যারা সাইকেল বা স্কুটার ব্যবহার করেন না, তাঁদের যথেষ্ট অসুবিধায় পড়তে হয়। অছিপুর ঘাট থেকে তারাতলা, বজবজ, মহেশতলা, নুঙ্গি, গার্ডেনরিচ, চড়িয়াল যাওয়ার জন্য কিছু অটো ও মোটরচালিত ছোট গাড়ি আছে। কিন্তু অভিযোগ, সেই গাড়ি পেতেও ঘাম ছুটে যায় যাত্রীদের।
অছিপুরের এই ফেরিঘাট এলাকাটি পূজালি পুরসভার অর্ন্তগত। পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: অনেক বার এই ঘাটের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মহলে আবেদন করা হয়েছে। যাত্রী-যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য অনেক বার আবেদনও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সারা মেলেনি। পূজালি পুরসভার চেয়ারম্যান কংগ্রেসের ফজলুল হক বলেন, “অছিপুর ফেরিঘাটে যাত্রীদের স্বচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আমাদের মতো ছোট পুরসভার অত অর্থ ব্যয় করার ক্ষমতা নেই।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের শামিমা শেখ বলেন, “৩৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে অছিপুর ফেরিঘাটের এই হাল হয়ে রয়েছে। সমস্যাটি আমাদের নজরে রয়েছে। উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছি। ওই এলাকায় যাত্রীদের সুবিধের জন্য আমরা বেশ কিছু ছোট গাড়ি চালানোর ব্যবস্থাও করেছি।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.