পূর্ব কলকাতা
কিশলয় হোম
জোর যার, জমি তার
মি দখলের অভিযোগ উঠল খাস পুরসভার বিরুদ্ধেই। বারাসত পুরসভার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন কিশলয় শিশু হোমের কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, কিছু না জানিয়ে পুরসভা হোমের জমির একাংশ ব্যবহার করছে। এমনকী, পুরসভা আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট করছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন।
কিশলয় হোমে উত্তর ২৪ পরগনার অনাথ ও নাবালক বিচারাধীনদের সরকারি খরচে রাখা হয়। বারাসত পুরসভার সামনে এই হোম। হোম-কর্তৃপক্ষ জানান, এই হোমের মোট জমির পরিমাণ ১৬.৪৬ একর। অভিযোগ উঠেছে, এর মধ্যে ১.৫১ একর জমি কোনও রকম বৈধ অনুমতি ছাড়াই বারাসত পুরসভা ব্যবহার করছে।
অভিযোগ, কিশলয় ভবনের পিছনেই চলে পার্কিংয়ের ব্যবসা। এর দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি বললেন, “আগে পুরসভার সামনের রাস্তায় সাইকেল, মোটরসাইকেল রাখা হত। এখন পুরসভা রাস্তার পাশে গাড়ি রাখতে দিচ্ছে না। তাই এখানে টাকার বিনিময়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল রাখি। কেউ কিছু বলেনি। পুরসভাও আপত্তি করেনি।” স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় পাল বললেন, “পুরসভার গ্যারাজ ঘর ছোট। অধিকাংশ সময়ে সাইকেল রাখার জায়গা মেলে না। তা ছাড়া গ্যারাজ ঘরটি পুর-ভবনের পিছনে বলে অনেকেই জানেন না। পুরসভার সামনে সাইকেল রাখতে গেলে কিছু পুরকর্মী কিশলয়ের ভিতরের পার্কিংয়ে রাখতে বাধ্য করেন।”
পুরসভা সূত্রে খবর, পুর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুরসভার আবর্জনা সংগ্রহকারী গাড়িগুলি ৩২টি ওয়ার্ডের আবর্জনা সংগ্রহ করে কিশলয়ের ভিতরে পুকুরের মধ্যে ফেলে। এতে পুকুরের পূর্ব দিকের কিছু অংশ কার্যত ভরাট হয়ে গিয়েছে। যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে প্লাস্টিকের প্যাকেট, আবর্জনা। এ ছাড়াও পুরসভার ময়লার গাড়ি, জলের গাড়ি এবং জলের পাইপ ও ইলেকট্রিকের খুঁটিও এখানেই থাকে।
নিয়মানুযায়ী, কোনও সরকারি সংস্থা যদি অন্য কোনও সরকারি সংস্থার সম্পত্তি ব্যবহার করতে চায় তবে তাকে আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে লিখিত ভাবে জানাতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, বারাসত পুরসভা অনুমতি ছাড়াই দিনের পর দিন এই কাজ করছে। কিশলয় হোমের সুপার প্রান্তিক ঘোষ বলেন, “পুরসভা কিশলয়ের জমি সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে। পুকুরের মধ্যে অন্যায় ভাবে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।” অভিযোগ স্বীকার করে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও লিখিত অনুমতি ছাড়াই ময়লা ফেলা হচ্ছে, গাড়ি, জলের পাইপ ও ইলেকট্রিকের খুঁটি রাখা হচ্ছে। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হবে। হোম কর্তৃপক্ষ বললে আমরা পুকুর থেকে বর্জ্য তুলে নেব।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.