তৃণমূলের অনুরোধ সত্ত্বেও ধর্মঘটের প্রথম দিন রাস্তায় বেসরকারি বাস নামেনি বালুরঘাটে। তাই বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন পথে বাস নামাতে গিয়ে তৃণমূলেরই বাধার মুখে পড়লেন মালিকপক্ষ। তার জেরে সকাল ৭টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত বালুরঘাট শহরে কোনও বেসরকারি বাস চলেনি। তবে তার মধ্যেই বালুরঘাটের মহকুমাশাসক বাস মালিকপক্ষ ও তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। তারপরে অচলাবস্থা কাটে। মহকুমাশাসক প্রতিমা দাস বলেন, “দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা মেটানো হয়। আগামীতে বন্ধ, ধর্মঘটের দিনে বাস চালু রাখতে মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
যেখানে তৃণমূল নেত্রী বারেবারেই ধর্মঘটের সময়ে বাস চালাতে বলেছেন, সেখানে তাঁর দলের বালুরঘাটের নেতারা কেন বেসরকারি বাস মালিকদের বাধা দিলেন? দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়ের অভিযোগ, “বুধবার সংগঠনের কর্মীরা বাস চালানোর জন্য স্ট্যান্ডে গিয়ে চাবি চাইলেও পাননি। অথচ সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বাস চালু করতে বলতেই বৃহস্পতিবার মালিকরা বাস চালাতে গেলেন কেন? সেটাই মালিক পক্ষের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। বাস বন্ধ করা হয়নি।” অভিযোগ, মালিকপক্ষ আলোচনায় সময় নষ্ট করায় বাস পথে নামতে দেরি হয়।
বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক খোকন সেন দাবি করেন, বুধবার কর্মীরা না-আসায় বাস চালানো যায়নি। তা ছাড়া, ধর্মঘটে রাস্তায় বাস ভাঙচুর হলে বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দেয় না। তিনি বলেন, “এদিন বাস ধর্মঘট ছিল না। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বাধায় বাস চালানো যায়নি।” নিজেদের মধ্যে আলোচনার নামে সময় কাটানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা আইন ও বিচার পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্রের অভিযোগ, “বাস মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছে মতো বাস চালু ও বন্ধ করবেন, তা হয় না।” বিপ্লববাবুর দাবি, “সকাল ৯টা নাগাদ প্রশাসনের আধিকারিক এবং বালুরঘাটের নেতৃত্বকে সমস্যা মেটাতে বলি। তার পরেই শ্রমিক সংগঠন সরে যায়। কিন্তু মালিকপক্ষ আলোচনার নামে বাস বন্ধ রেখে সময় কাটাতে থাকেন।” প্রাক্তন কারামন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “সকালে বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা বাস বন্ধ করে জুলুম চালানোয় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রশাসনের ব্যবস্থা নিতে ৭-৮ ঘন্টা লেগে গেল।” |