নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
মোটা টাকা নিয়ে একজনের জমি অন্যের নামে মিউটেশন করে দেওয়ার অভিযোগে এক রেভিনিউ অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। ভূমিসংস্কার দফতরের খবর, ওই অফিসারের নাম দাওয়া লামা। তিনি ওই দফতরের শিলিগুড়ি অফিসে কর্মরত রয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁকে শো কজ করেছেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। ওই অফিসার শো কজের যে উত্তর দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট নন জেলাশাসক। দীর্ঘদিন ধরেই শিলিগুড়িতে ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্মীদের একাংশের সঙ্গে প্রমোটার চক্রের যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। একই ভাবে প্রোমোটারদের একাংশ শিলিগুড়িতে বেশ কিছু জমি হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওই অফিসার অবশ্য ওই ঘটনায় কোনও টাকা লেনদেনের বিষয় রয়েছে বলে অস্বীকার করেছেন।
জেলাশাসক বলেন, “অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। তিনি লিখিত ভাবে তার উত্তর জানিয়েছেন। ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার তদন্ত করছেন ভূমি রাজস্ব দফতরের দার্জিলিং জেলা আধিকারিক গোপাল লামা। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিলিগুড়িকে জমি সমীক্ষা হয়নি। প্রায় ২৫ বছর আগে সমীক্ষা হয়েছিল। সেই হিসেবে রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু সব কম্পিউটারাইজড করা যায়নি। যার ফলে ওই জমি যে মিউটেশন হয়েছে তা তিনি জানতেন না বলে রেভিনিউ অফিসার জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির স্টেশন ফিডার রোড লাগোয়া খালপাড়ার নয়াবস্তি এলাকায় বহু টাকা মূল্যের একটি জমির মিউটেশন নিয়েই অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই জমি যার তাঁর নামে মিউটেশন রয়েছে। এই অবস্থায়, এলাকারই এক ব্যক্তি ওই জমি তাঁর বলে দাবি করে রেভিনিউ অফিসারের সহযোগিতা নিয়ে তা ফের মিউটেশন করিয়ে নেন। জমির প্রকৃত মালিক তা জানতে পেরে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান। ওই দফতরের শিলিগুড়ি মহকুমা অফিসের আধিকারিকরা দাবি করেন, ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে শিলিগুড়িতে জমির সমীক্ষা হয়নি। দ্বিতীয় দফার যে সমীক্ষা হয়েছিল সে হিসেবেই জমির রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু, এই সময়ের মধ্যে বহু জমি একাধিক বার হাত বদল হলেও তাঁর রেকর্ড সঠিক ভাবে নথিভূক্ত নেই। তার ফলেই সমস্যা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি মহকুমার ভূমি রাজস্ব আধিকারিক থেনডুপ নামগেয়াল শেরপা বলেন, “শিলিগুড়িতে বর্তমানে একটি সমীক্ষার কাজ চলছে। তা সম্পূর্ণ হলেই সমস্যা থাকবে না।” অভিযুক্ত অফিসার দাওয়া লামা বলেন, “প্রযুক্তিগত ভুল। এর মধ্যে অন্য ব্যাপার নেই।”
এই যুক্তি মানছেন না বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, জমি কেনাবেচা বা মিউটেশনের সময়ের তথ্য ভূমি রাজস্ব দফতরে আছে। তা জেনেও অনেকে প্রলোভনে অন্যের নামে মিউটেশন করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। |