নিগৃহীত ইঞ্জিনিয়াররাও
প্রধান শিক্ষককে মারধর, শিক্ষকদের বাধা
কোথাও প্রধান শিক্ষককে নিগ্রহ। কোথাও বনধের দিন স্কুল না খোলা থাকায় পর দিন তালা দিলেন গ্রামবাসী। কোথাও আবার শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দিলেন বনধ সমর্থকেরা। শুধু শিক্ষক নন, নিগ্রহের হাত থেকে রেহাই পাননি ইঞ্জিনিয়াররাও। সাধারণ ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন, বৃহস্পতিবারও এমন নানা ঘটনার সাক্ষী রইল উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক স্কুল।
বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের একটি স্কুলে কেন পড়ুয়ারা আসেনি, সেই প্রশ্ন তুলে মারধর করা হয় প্রধান শিক্ষক পথিকসুজন সেনগুপ্তকে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন এক সহ-শিক্ষক। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার খিদিরপুর নেতাজি কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাসকেও মারধর করা হয়। তাঁর ‘অপরাধ’, বনধের প্রথম দিন তিনি স্কুলে আসেননি। মূল অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তবে, স্কুলের শিক্ষকদের একাংশও ঘটনায় জড়িত বলে প্রধান শিক্ষকের দাবি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। প্রধান শিক্ষক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে আহত মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র
ওই জেলারই জঙ্গিপুরের গোবিন্দপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ দিন গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে দেননি তৃণমূল সমর্থকেরা। বাড়ি ফিরে যেতে হয় পড়ুয়াদের। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম তৃণমূল নেতা মনিরুল হক বলেন, “ধর্মঘটের প্রথম দিন স্কুলের সামনে অবরোধ হয়নি। তবু শিক্ষকেরা আসেননি। পড়ুয়ারা এসে ফিরে গিয়েছে। তাই আমরাই স্কুলে তালা দিয়েছি।” বর্ধমানের কালনা ২ ব্লকের বিরূহা গ্রামের বাসিন্দারা একই কারণে এ দিন তালা ঝোলান গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ‘ভুল’ স্বীকার করার পরে তালা খোলা হয়।
কোচবিহারের দিনহাটার পেটলা এডেড প্রাইমারি স্কুলে আবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিরুদ্ধে। বুধবার স্কুলে গিয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ক্লাসও হয়। তাই এ দিন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্য শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে গেলে দেরিতে পৌঁছনোর অজুহাতে বাধা দেওয়া হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, শিক্ষকদের অন্যতম, কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঢুকতে বাধা দেন ফব কর্মীরা। অক্ষয়বাবুর দাবি, “দেরিতে স্কুলে যাওয়ায় কিছু অভিভাবক ক্ষোভ জানান। এটা রাজনৈতিক বিষয়ই নয়।”
বন্ধের দিনে স্কুল বন্ধ রাখা নিয়ে এ দিন তেতে ওঠে হুগলির চণ্ডীতলার কলাছড়া হাইস্কুল চত্বর। বুধবার বন্ধ ছিল স্কুল। এ দিন তৃণমূলের কিছু কর্মী স্কুলে জড়ো হন। তাঁদের দাবি, স্কুলে বনধের সমর্থনে পোস্টার সাঁটা রয়েছে। এর পরেই প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয় তৃণমূল। বিডিও কৌসর আলি গিয়ে পরিস্থিতি সামলান। প্রধান শিক্ষক সাগরচন্দ্র নন্দী বলেন, “স্কুলের ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ১৩ জন বনধ সমর্থন করেই স্কুলে আসেননি। কিন্তু আজ যা হল, গায়ের জোরে হল।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে ঝাঁপবেড়িয়া হাইস্কুলেও বুধবার স্কুলে না আসায় এ দিন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঢুকতে দেননি এক দল তৃণমূল সমর্থক।
অন্যদিকে, ধর্মঘটে বুধবার একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় দুই ইঞ্জিনিয়ারকেও মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ব্যারাকপুর দু’নম্বর মোহনপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের প্রেমচাঁদ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, ধর্মঘটের জন্য বুধবার কর্মীরা না আসায় একশ দিনের কাজ বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক পঞ্চায়েত অফিসে এসে বুধবার কাজ বন্ধ ছিল কেন জানতে চেয়ে দুই ইঞ্জিনিয়রকে মারধর করেন। তৃণমূলের উত্তর ২৪পরগনা জেলা সভাপতি নিমর্ল ঘোষের অবশ্য দাবি, ওই ঘটনায় তাঁদের কেউ জড়িত নন। ব্যরাকপুর-২ এর বিডিও অমিত শেঠ জানান,ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.