|
|
|
|
বনধে স্কুল না খোলায় শিক্ষককে মার, গেটে তালা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলডাঙা ও রঘুনাথগঞ্জ |
ধর্মঘটের দিন বুধবার স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার সকালে হরিহরপাড়ার খিদিরপুর নেতাজি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ে পৌঁছতেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা প্রধান শিক্ষককে এলোপাথাড়ি মারধর করে বলে অভিযোগ।
পাশাপাশি বনধের প্রথম দিন স্কুলে না আসায় বৃহস্পতিবার জঙ্গিপুরের গোবিন্দপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষকদের ঢুকতে দিলেন না তৃণমূল সমর্থকেরা। বাড়ি ফিরে গেল পড়ুয়ারা। মাঠের মধ্যে দিনভর ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন শিক্ষকেরা।
হরিহরপাড়ার ঘটনায় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। হরিহরপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রধান শিক্ষককে পাঠান হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “এ দিন স্কুলে পৌঁছে গেটের তালা খোলার সময়ে আমাকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ শুরু করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। পরে ওই কর্মী-সমর্থক আমার একলার ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে আমাকে এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুষি মারতে থাকে তারা। ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্কুলের কয়েক জন শিক্ষকও ছিলেন।” প্রধান শিক্ষক নিগ্রহের মত ঘটনা অবশ্য জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের ‘অজানা’। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বিমল পান বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা নেই।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে আইন আইনের পথেই চলবে। তবে যদি কোনও প্রধান শিক্ষক সিপিএমের হয়ে ওকালতি করতে গিয়ে স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ করে দেয় এবং যারা স্কুল করতে চেয়েছিল তাঁদেরও বিরুদ্ধাচরণ করে, সেই সমস্ত প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা খোঁজ খবর নেব।”
প্রধান শিক্ষকের কথায়, “বন্ধের দিন ব্যক্তিগত কারণে স্কুলে আসতে পারব না তা মঙ্গলবার লিখিত জানিয়েছি। সেই মত স্কুলের গেটের চাবি স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের কৃষ্ণচন্দ্র বিশ্বাসের কাছে রেখে আসি, যাতে বুধবার স্কুল খোলা যায়।” পরিচালন সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র বিশ্বাসও বলেন, “বুধবার কেউ স্কুলের চাবি নিতে আসেনি।” শিক্ষক নিগ্রহের প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়ক রাস্তা অবরোধ করে রাখে স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে হরিহরপাড়া থানায় অবিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।
অন্য দিকে, রঘুনাথগঞ্জের স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রদীপ ঘোষাল তিনি বলেন, “বুধবার স্থানীয় এক শিক্ষক ফোনে জানান স্কুলে পিকেটিং চলছে। তাই শিক্ষকেরা স্কুলে আসেননি।” তৃণমূলের কাশিয়াডাঙা অঞ্চল সভাপতি মনিরুল হকের কথায়, “ধর্মঘটের প্রথম দিন স্কুলের সামনে অবরোধ হয়নি। তা সত্ত্বেও শিক্ষকেরা আসেননি। পড়ুয়ারা এসে ফিরে গিয়েছে। এ দিন আমরাই স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শিক্ষকদের ঢুকতে দিইনি।” |
|
|
|
|
|