|
|
|
|
কড়া মন্তব্য হাইকোর্টের |
হুমায়ুনের ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ নিয়ে জবাব তলব |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রী তিনি। রেজিনগরের আসন্ন উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীও। ভোটের মুখে সেই হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে কড়া মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চাইল মুর্শিদাবাদে আইনের শাসন চলবে, নাকি এক জন মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতা চলবে?
শনিবার রেজিনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তার আগে মন্ত্রীকে নিয়ে হাইকোর্টের এই মন্তব্যে কংগ্রেস কিছুটা চাঙ্গা বোধ করছে। মাস কয়েক আগে কংগ্রেস ছেড়েই হুমায়ুন তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন।
কীসের ভিত্তিতে এ দিন হাইকোর্ট হুমায়ুন কবীর প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করল? সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী সন্তু সিংহ অভিযোগ করেন, মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর তাঁকে বারবার টেলিফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয়। তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। ১৪ নভেম্বর রেজিনগরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২১ নভেম্বর মন্ত্রী হন। ২৩ ডিসেম্বর হুমায়ুন কবীর তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে সন্তুবাবুর অভিযোগ।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার (তাঁর নামও হুমায়ুন কবীর) ওই রিপোর্ট পেশ করেন। সেখানে বলা হয়েছে, মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে টেলিফোনে হুমকি দেওয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে বিচারপতি দত্ত সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, মুর্শিদাবাদে তা হলে কী চলবে? আইনের শাসন, না রাজ্যের এক
মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতা?
আবেদনকারী সন্তু সিংহের আইনজীবী কল্লোল বসু এ দিন আদালতে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও পুলিশ আবেদনকারীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি। পুলিশ বরং নিরাপত্তার জন্য তাঁর কাছে টাকা চেয়েছে। কল্লোলবাবুর এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, হাইকোর্ট কারও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়ার পরেও পুলিশ কী ভাবে টাকা চাইতে পারে? পুলিশ সুপার যদি মনে করেন, নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই তা হলে তিনি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না-ও করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর কোনও ক্ষতি হলে তার দায় বর্তাবে পুলিশ সুপারের উপরেই। বিচারপতির মন্তব্য, সামনে উপনির্বাচন। তাই তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কড়া অবস্থান নিতে চাইছেন না। হাইকোর্টের বক্তব্য শুনে বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “আমরা আগে থেকেই জানতাম এসপি তৃণমূলের তল্পিবাহক। এ বার হাইকোর্টের কথাতেও সেটাই প্রমাণিত হল।” পুলিশ সুপার অবশ্য বলেছেন, “রায় না দেখে মন্তব্য করব না।”
আর, মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য কী? তাঁর দাবি, “সন্তু সিংহ মিথ্যা তথ্য দিয়ে হাইকোর্টকেও বিভ্রান্ত করছে।” |
|
|
|
|
|