|
|
|
|
মারাই গেল ছোট্ট শর্মিলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
বাঁচানো গেল না শর্মিলিকে। মায়ের নির্মম অত্যাচারের শিকার দেড় বছরের এই শিশুকন্যা বুধবার গভীর রাতে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গিয়েছে। স্বাস্থ্যঅধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “আশা করেছিলাম ও সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু আচমকা কিডনির সংক্রমণ বেড়ে যায়। সেটা গোটা শরীরে ছড়িয়ে মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয়। আসলে এত অত্যাচার ওইটুকু শিশু নিতে পারেনি।”
বাবা তাকে নিতে চায়নি আর মায়ের প্রেমিক তাকে মেনে নেয়নি বলে গত রবিবার শর্মিলির মা লছমি মুণ্ডাই তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কচি হাত দুটো ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে, মাথায় ভারী জিনিস দিয়ে আঘাতের পর মেয়ের অচৈতন্য দেহটি সুবর্ণরেখার চরে কোমর পর্যন্ত বালি চাপা দিয়ে দেয় লছমি। চারপাশে ছড়িয়ে দেয় বিস্কুট, যাতে কুকুর এসে ছোট্ট শরীরটা ছিঁড়ে খায়। ঘটনার দিনই ঝাড়গ্রাম মহকুমার বেলিয়াবেড়া থানার পেটবিন্ধি গ্রামের বাসিন্দা লছমি ও তার প্রেমিক রফিকুল শেখকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। আপাতত তারা জেলহাজতে রয়েছে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে এ বার খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারা যোগ করতে আদালতে আবেদন করা হবে বলে এ দিন জানান ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার ভারতী ঘোষ। তিনি আরও বলেন, “শর্মিলির দেহ ঝাড়খণ্ডের নোয়ামুণ্ডিতে পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” বেলিয়াবেড়া থানার ওসি জয়ন্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দেহ নিয়ে নোয়ামুণ্ডি যাবেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
লছমির বাপেরবাড়ি নোয়ামুণ্ডিতে। সেখানেই থাকে তার বড় মেয়ে বছর চারেকের পুনম। লছমির বিয়ে হয়েছিল ওড়িশার বড়বিলে দিনমজুর গুড়া মুণ্ডার সঙ্গে। তবে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রি রফিকুলের সঙ্গে ওড়িশাতেই আলাপ হয় লছমির। ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। পরে প্রেমের টানে স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে লছমি। সঙ্গে এনেছিল ছোট মেয়ে শর্মিলিকে। কিন্তু তাকে মেনে নেয়নি রফিকুল। আর গুড়া মুণ্ডাও মেয়েকে রাখতে চায়নি। এই পরিস্থিতিতে নিজেরই মেয়েকে খুন করতে যায় শর্মিলি। গোটা ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকারও করেছে সে। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক গোপন জবানবন্দি দিয়েছে লছমি। |
|
|
|
|
|