এম এস আর ওর ছেলেদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজের প্রথম টেস্টটা চেন্নাইয়ে পড়া একেবারে আদর্শ হয়েছে। চিপক বরাবরই টানটান, রক্তচাপ বাড়ানো যুদ্ধের ময়দান। আর সেই যুদ্ধগুলোর বেশিরভাগই ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া! আমার ব্যক্তিগত পছন্দের তালিকায় অবশ্য এক নম্বরে রয়েছে ২০০৮-এ ইংল্যান্ডে বিরুদ্ধে সেই অসাধারণ জয়। যে বার সচিন আর যুবির দুরন্ত পার্টনারশিপের জোরে আমরা প্রায় চারশো তাড়া করে জিতেছিলাম।
পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৯৯-এর ক্ল্যাসিক টেস্টও তো এই মাঠে। সচিন দুর্ধর্ষ সেঞ্চুরি করলেও আমরা অল্পের জন্য ম্যাচটা হেরেছিলাম।
তবে চিপকে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ক্ল্যাসিক লড়াইয়ের কোনও কমতি নেই। তা সে ১৯৮৬-র টাই টেস্টই হোক বা ১৯৮৭ বিশ্বকাপে ভারতের এক রানে হার। এই নাটকীয় লড়াইগুলোর বেশ কয়েকটায় সামিল থাকার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। যার মধ্যে ১৯৯৮-এ সচিনের সেই অপরাজিত ১৫৫-র ইনিংসটা রয়েছে। ২০০১-এ ইডেন গার্ডেন্সে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের ঠিক পরে এখানে দু’উইকেটের চাঞ্চল্যকর জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলাম আমরা। তবে আমার কোচদের কাছে যা শুনেছি, তাতে চিপকে ১৯৭৪-এ গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের অপরাজিত ৯৭-এর ইনিংসটার সঙ্গে নাকি আর অন্য কিছুর তুলনা চলে না। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলিংয়ের গতি আর পেশি শক্তিকে স্রেফ টাচ প্লে আর টাইমিংয়ের নিখাদ ব্যাটিং শিল্পে চুরমার করে দিয়েছিলেন ভিশি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২০০৮-এ বীরুর আক্রমণাত্মক তিনশোকেও তো ভোলা যায় না!
তবে চেন্নাই বলেই বাতাসে অসম্ভব আর্দ্রতার ফ্যাক্টরকে অগ্রাহ্য করা যাচ্ছে না। স্টেডিয়াম নতুন করে তৈরির হওয়ার পর আজকাল অবশ্য অনেক বেশি খোলামেলা। চেন্নাইয়ের পিচ স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা শুকনো আর খড়খড়ে বলে এখানে রিভার্স সুইংটা ভাল হয়। কিন্তু এখন স্ট্যান্ডের মাঝে মাঝে ফাঁক বাড়ায় নতুন বলে সাধারণ সুইংটাও ভাল হবে। সঙ্গে চা বিরতির পরে সমুদ্রের হাওয়াটাও বেশি করে ঢুকে পেসারদের সাহায্য করবে।
২০০১-এ এখানে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্মৃতি অসম্ভব সুখের কারণ ওই টেস্টটায় পিছন থেকে উঠে এসে একটা অসাধারণ সিরিজ জেতার আনন্দ মিশে রয়েছে। সে বার চতুর্থ ইনিংসে ভাল খেলতে খেলতে হঠাৎই মাঝপথে পরপর উইকেট হারিয়ে বসি আমরা। প্রায় বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রবল চাপের মুখেও না ঘাবড়ে ম্যাচটা জিতে নিই আমরা।
তার পর থেকে ভারত কিন্তু চিপকে আর কোনও টেস্ট খেলেনি। তবে চেন্নাই ভারতের জন্য বরাবরের লাকি কেন্দ্র। শুক্রবার মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে টস করতে নামার সময় সে কথাটা এমএস-কে বাড়তি ভরসা জোগাবে। আশা করি ভারতীয় দলও এর থেকে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সিরিজের শুরুটা এখানে জয় দিয়েই করবে। |