|
|
|
|
রোড ওভারব্রিজ চালু হল ডানকুনিতে, মিটল যন্ত্রণা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ডানকুনি |
দীর্ঘ টালবাহানা এবং রাজনৈতিক আকচা-আকচির পরে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ডানকুনিতে রেল লাইনের উপর চালু হল রোড ওভারব্রিজ। মিটল দীর্ঘ দিনের লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে যাতায়াতের যন্ত্রণা।
এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দেশপ্রিয় পার্কে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রিমোটের মাধ্যমে রোড ওভারব্রিজটি চালু করেন। ডানকুনির মিলন সংঘের মাঠে এই উপলক্ষে একটি বড় পর্দা টাঙানো হয়েছিল। তাতে ভেসে ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ। পাশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার ও কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। তাঁরা সবুজ পতাকা নাড়তে থাকেন। সেই সঙ্কেত পেতেই শুরু হয়ে যায় যান চলাচল। আর সেই সঙ্গেই যবনিকা পড়ে এই রোড ওভারব্রিজের উদ্বোধন ঘিরে দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের। |
|
উড়ালপুলের উদ্বোধনের ছবি দীপঙ্কর দে-র। |
২০০৫ সালে ওই ওভারব্রিজটির শিল্যানাস করেন রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। কিন্তু ওই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য জমির যে নকশা তৈরি হয়, তাতে মোট ১৬৬টি দোকানঘর এবং ২৫০টি বসতবাড়ি পড়ে। প্রাথমিক ভাবে সেই সব দোকানদারদের সাময়িক ভাবে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। না হলে সেতুর নির্মাণ কাজই শুরু করা যাচ্ছিল না। তার উপর যে সমস্ত বাড়ি ওই প্রকল্পে ভাঙার জন্য নির্দিষ্ট হয়, সেই সব বাড়ির মালিকেরা দর নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। এই সব নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এ ছাড়াও, প্রস্তাবিত সেতুটির জায়গায় কংগ্রেসের একটি কার্যালয় ছিল। সেটি সরাতেও দলের স্থানীয় নেতৃত্ব অরাজি ছিলেন। সব মিলিয়ে অনিশ্চতা তৈরি হয় প্রকল্পটি নিয়ে।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য পূর্ত দফতর ওই প্রকল্প লাগোয়া নিজেদের জায়গায় অস্থায়ী ঘর তৈরি করে দেয়। দোকানদাররা সেখানে সরে আসেন। শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। মোট ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি তৈরি করা হয়। তার মধ্যে সাত কোটি টাকা দিয়েছে রেল। সেতুটি মোট ৬৩৭ মিটার লম্বা এবং ২৯ মিটার চওড়া।
রাজ্য পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার গৌতম ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমাদের লক্ষ্য ছিল ব্রিজটি চালু করে দেওয়া। এরপর ওই ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তা এবং নিকাশি ব্যবস্থার কাজ পর্যায়ক্রমে করা হবে।”
এই ব্রিজটি চালু হওয়ায় ওই পথে চলাচলকারী যানবাহন এবং এলাকার মানুষজন উপকৃত হবেন। হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার রেল লাইনের উপর ওই ব্রিজটির দাবি দীর্ঘ কয়েক দশকের। কারণ ওই রেল লাইনটি অত্যন্ত ব্যস্ত। ওই শাখা দিয়ে হাওড়া থেকে শুধু দূরপাল্লার ট্রেনই নয়, বহু লোকালও চলে। তার ফলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি রোড থেকে যাতায়াতকারী বহু গাড়ি রেলের লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে যেত এত দিন। লেভেল ক্রসিংয়ে বহু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হত। নতুন এই ব্রিজ চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের অসুবিধা দূর হল। উদ্বোধন ঘিরে সাধারণ মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। |
|
|
|
|
|