|
|
|
|
উদ্বোধনের টক্করে ডানকুনিতে পাল্টা চাল রেলের |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রেল আর হার মানতে নারাজ। তাই বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশপ্রিয় পার্ক থেকে মুখ্যমন্ত্রী যখন রিমোটে ডানকুনি রেল ওভারব্রিজের উদ্বোধন করলেন, দেখা গেল তার আগেই পূর্ব রেল প্রেস বিবৃতি মারফত সেতুর উদ্বোধন করে দিয়েছে!
চলতি মাসের গোড়ায় মাটি উৎসবে যোগ দিতে পানাগড়ে গিয়ে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া হাইওয়েতে রেল লাইনের উপর নতুন এক সেতু উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে রেলের কাউকে অবশ্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি! রেল-রাজ্য যৌথ প্রকল্পে উদ্বোধনের কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে একা নিয়ে নেওয়ায় রাজনৈতিক তরজাও কম হয়নি। এ নিয়ে মমতার বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। দুর্গাপুরের সেতুতে রাজ্যের তৈরি অংশে নির্মাণগত ত্রুটির অভিযোগও এনেছে রেল। এবং দুর্গাপুরের পুনরাবৃত্তি যাতে ডানকুনিতে না হয়, সে ব্যাপারে
রেল-কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ার ছিলেন। |
|
বৃহস্পতিবার এই সেতুরই উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র |
এ দিন দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রেল-সেতুর উদ্বোধনের জন্য হুগলির ডানকুনিতেও একটি মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ডানকুনির মিলন সঙ্ঘের মাঠের অনুষ্ঠানমঞ্চে বড় পর্দায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ভেসে উঠতেই মঞ্চে আসীন মুকুল রায়, সুদর্শন ঘোষদস্তিদার, বেচারাম মান্না, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা সবুজ পতাকা নাড়তে শুরু করেন। দেশপ্রিয় পার্কের মঞ্চ থেকে রিমোটে ওভারব্রিজ উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্কেত পেয়ে সেতুতে শুরু হয় যান চলাচল।
তার আগেই অবশ্য জারি হয়ে গিয়েছে পূর্ব রেলের বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তি ‘যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হল ডানকুনি রেল ওভারব্রিজ।’ প্রকল্পটির পিছনে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীরও যে অবদান রয়েছে, রেল-কর্তৃপক্ষ তা-ও লিখিত ভাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন। রেলের দাবি: নতুন প্রযুক্তির সুবাদে ট্রেন চলাচল বন্ধ না-রেখে এটি বানানো হয়েছে। ৫৩ মিটার লম্বা সেতুটির পিছনে রেলের খরচ হয়েছে ১২ কোটি টাকার বেশি। অধীরবাবু এ দিন দিল্লি থেকে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের কোনও কাজই করে দেখাতে পারছেন না। একমাত্র রেলে কাজ হয়। এখন রেলে তৃণমূলের কেউ নেই। তবু রেলকে উনি ছাড়তে পারছেন না। তাই প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমরাই লোককে জানালাম ব্রিজ উদ্বোধনের কথা।”
এ দিন রাজ্যের আমন্ত্রণে ডানকুনির অনুষ্ঠানমঞ্চে হাজির ছিলেন পূর্ব রেলের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার (নির্মাণ) রাজেশ অগ্রবাল এবং প্রকল্পটির প্রজেক্ট ম্যানেজার অনুজ মিত্তল। রেল-রাজ্য টক্করের পাশে হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার ওই রোড-ওভারব্রিজ ঘিরে আমজনতার উৎসাহও ছিল চোখে পড়ার মতো। বহু পুরনো দাবি পূরণ হওয়ায় যাঁরা যারপরনাই খুশি। ডানকুনির অনুষ্ঠানে মাইকের বন্দোবস্ত থাকলেও পরীক্ষা-বিধি চালু থাকায় তা বাজানো হয়নি। মন্ত্রী ও সাংসদেরা খালি গলায় বক্তৃতা করেন। |
|
|
|
|
|