তিরপিতা। এই নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি, একটি সেতু হোক। নলহাটি থানার জুঙুল ও সিংডহরী গ্রামের দীর্ঘ দিনের এই দাবি পূরণ তো হয়নি, বরং সমস্যাটি জিইয়ে রেখে ফায়দা তোলাটাই হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলির কাজ বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের। একই দাবি, ওই থানার দেবগ্রাম, বুজুং, সরস্বতীপুর, ধরমপুর, বড়লা, সরধা, পাখা, খিদিরপুর, কানাইপুর, তৈলপাড়া প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দাদের।
শুধু তিরপিতা নয়, নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতির কয়থা ১, বড়লা, কুরুমগ্রাম অঞ্চলগুলি-সহ রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির হাঁসন ১ ও হাঁসন ২ পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে ব্রাহ্মণী নদীর উপর নলহাটি থানার দেবগ্রাম ঘাটে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখানেও সেই অপেক্ষা এবং রাজনৈতিক সুবিধায় ব্যবহার বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের। |
তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব ওঝার হয়ে নলহাটিতে শেষ দিনের
প্রচারে লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম |
গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের প্রচারে রোড-শো তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে প্ল্যাকার্ড দেবগ্রামে সেতুর দাবি জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। তখনকার মতো সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে দেখা গিয়েছিল প্রণববাবুকে। বর্তমানে অভিজিৎবাবু জঙ্গিপুরের সাংসদ এবং বাবা রাষ্ট্রপতি প্রণববাবু। এখনও সেই সেতু হয়নি। সামনে আরও একটি নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলি প্রচারে আসছেন এবং মিলছে আশ্বাস। বুজুং গ্রামের ডালিম পাল বলেন, “ব্রাহ্মণী নদীর উপরে সেতু হলে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ, পাঁচগ্রাম, জঙ্গিপুর, সাগরদিঘি, বহরমপুরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হবে নলহাটি ও মাড়গ্রাম থানার কয়েক হাজার বাসিন্দার। মাড়গ্রাম থেকে রামেশ্বরপুর পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মাণ হয়ে আছে। দেবগ্রাম ঘাটে এই সেতুর অভাবে বর্ষায় সময় নৌকায় পারাপার করতে হয়।” তাঁর ক্ষোভ, “অন্য সময় সাইকেল ও মোটরবাইক নিয়ে হাঁটু জল পেরিয়ে যেতে হয়। সেতুর আশ্বাস মেলা ছাড়া কিছুই হচ্ছে না।”
অন্য দিকে, জুঙুল, সিংডহরী গ্রামের বাসিন্দা শিশির মণ্ডল, অমর মণ্ডল, আদিত্য মাল, বিনয় মালদের ক্ষোভ, “এলাকার বেশিরভাগ শ্রমিক নলহাটি থানার বাহাদুরপুর পাথর শিল্পাঞ্চলে কাজ করেন। বর্ষায় তিরপিতা নদী পেরিয়ে যাতায়াত করতে তালগাছের ডিঙি ভরসা। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সদর্থক ভূমিকা প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা নিচ্ছেন না।” নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কংগ্রেসের মাধবেন্দ্র ঘোষাল বলেন, “দু’টি নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘ দিন আগে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন মিললে কাজ শুরু হবে।” সেচ দফতরের নলহাটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র সুকান্ত দাস বলেন, “তিরপিতা নদীর উপরে সেতু নির্মাণে আমাদের কোনও সহযোগিতা দরকার হলে করব। আর ব্রাহ্মণী নদীর উপরে সেতু নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছি।” |