নিষ্প্রদীপ ঘরে শুধু হাহাকার
বছর পার, তবু সন্ত্রাসের কথাই বলছে সিপিএম
দেখতে-দেখতে বছর ঘুরে গেল।
এক বছর আগে এই দিনেই বর্ধমান শহরের উপণ্ঠে দেওয়ানদিঘিতে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারা হয়েছিল দাপুটে সিপিএম নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা-কে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ যায় জোনাল সদস্য, সত্তরোর্ধ্ব কমল গায়েনের। অভিযুক্তদের অর্ধেক এখনও ধরাই পড়েনি। প্রধান অভিযুক্ত, তৃণমূল নেতা পতিতপাবন তা ছাড়া জামিন পেয়ে গিয়েছেন সকলে।
রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনেই। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার দুই ‘শহিদ’ নেতার স্মরণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে যে সিপিএম বর্ধমানে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে, তা এক রকম প্রত্যাশিত। কিন্তু নিরুপমের সেনের শহরে আসার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তা পারছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “শরীর খারাপ হয়ে না পড়লে বুদ্ধবাবু অবশ্যই আসতেন। তবে বিমান বসু এবং নিরুপম সেন উপস্থিত থাকবেন।”
এক বছর আগে সে দিন। —ফাইল চিত্র।
সভা শুরু হওয়ার কথা দুপুর আড়াইটেয়। অমলবাবু জানান, মাদ্রাসা পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় প্রকাশ্যে জনসভা করার পরিস্থিতি নেই। তার উপরে সামনেই মাধ্যমিক। সে কারণে বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। এ দিন দেওয়ানদিঘিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, সিপিএমের সদর জোনাল অফিসে বসে সভার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতারা। জোনাল সম্পাদক মহবুব আলম অভিযোগ করেন, “দুই নেতার হত্যাকাণ্ডে বেশ কিছু লোককে ধরতে পারেনি সিআইডি। তাদের সঙ্গে জুটেছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। সন্ত্রাসের বাতাবরণ রয়েই গিয়েছে। আমাদের কর্মীদের সমস্ত কাজকর্মে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই হুমকি দেওয়া হচ্ছে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে বা পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ানোর চেষ্টা হলে, প্রদীপ তা-কমল গায়েন বানিয়ে দেব!”
কিছু দিন আগেই হাইকোর্টে প্রদীপবাবুর স্ত্রী চিত্রলেখা এবং মেয়ে পৃথা জানিয়েছিলেন, তাঁদের নিরাপত্তা নেই। অভিযুক্ত বা তাদের দলের লোকেরা তাঁদের অনুসরণ করছে, হুমকি দিচ্ছে। আদালতের নির্দেশে দেওয়ানদিঘির পুলিশ ক্যাম্প থেকে বাড়তি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। পড়াশোনার জন্য পৃথা কলকাতায়। এ দিন বাড়িতে ছিলেন না চিত্রলেখা। ফোনেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দেওয়ানদিঘির লোকজন আগে যেমন জানিয়েছিলেন, এ দিনও আশ্বস্ত করেন, তাঁরা ওই পরিবারের প্রতি যথেষ্ট ‘সহানুভূতিশীল’। ভয়ের কোনও কারণ নেই। তবে সিপিএমের দাবি, শুধু ওই পরিবার নয়। সন্ত্রাসের লক্ষ্য তাঁদের অন্য নেতা-কর্মীরাও। এলাকায় আঠারোটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত আড়াইশো আসন রয়েছে। সেগুলিতে সিপিএম প্রার্থী দেওয়া আটকাতে গ্রামে-গ্রামে ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
দেওয়ানদিঘির তৃণমূল নেতা নুরুল হাসান পাল্টা বলেন, “ওরা যত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, ততই সন্ত্রাসের কাহিনি আমদানি করছে। ঘটনাটি দুঃখজনক। কিন্তু তার পর থেকে কার্যত আর কিছুই ঘটেনি। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় আছে।” মহবুব বলেন, “আমরা প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমাদের কর্মীরা ভয়ে সরে যাবেন না। প্রতি বছর প্রদীপ-কমল স্মরণে সভাও করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.