কোথাও শেড করে দোকান বসেছে। আবার কোথাও দোকানের মালপত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কেউ আবার ব্যবসায়িক সাইনবোর্ড বসিয়ে রেখেছেন। কোচবিহার শহর জুড়ে ফুটপাথ ও রাস্তা এভাবেই দখল হয়ে যাওয়ায় নিত্য ভোগান্তির মুখে পড়ছেন। সাধারণ পথচারি থেকে বাসিন্দারা তার পরেও সমস্যা মেটাতে পুরসভা থেকে প্রশাসন কোন মহলের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। ফলে বাসিন্দাদের ক্ষোভ আরও বেড়ে গিয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক বছর আগে জবর দখল হটাতে পুরসভা প্রশাসন অভিযান চালালেও তারপর থেকে নজরদারি চালানো হয়নি। ওই সুযোগেই কোচবিহারে রাস্তা ও ফুটপাথ দখলদারদের রমরমা বেড়ে গিয়েছে। শহরবাসীর অভিযোগ, কোচবিহারের অন্যতম ব্যস্ততম রাস্তা সুনীতি রোড বিশ্বসিংহ রোড কেশব রোড সিলভার জুবিলি রোড জুড়ে ফুটপাথ দখলের জেরে পরিস্থিতি ভয়াবহ নিত্য যানজট। |
ফুটপাথের উপরেই দোকান। ছবিটি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
শহরের মিনিবাস স্ট্যান্ড চত্বর গুঞ্জবাড়ি স্টেশন মোড় সাগরদিঘি চত্বর নিউ টাউন এলাকা জুড়েও আর এন রোড এন এন রোডের অবস্থা। আরও মারাত্মক রাস্তা দখল করে পণ্য ওঠানামা করানোর জেরে দিনে তো বটেই, রাতেও ওই রাস্তায় চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে কাছারি মোড় হরিশ পাল চৌপথী, ট্রান্সপোর্ট চৌপথী, পাওয়ার হাউস চৌপথী, ভবানীগঞ্জ বাজার নতুন বাজার রেলগেট লাগোয়া এলাকাতেও রাস্তা দখল করে দোকান বাজার বসায় হাঁটাচলা দায়। কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সম্পাদক রাজু রায় বলেন, “শহরের ব্যস্ততম এলাকার প্রায় সব রাস্তা ও ফুটপাথ বেআইনি ভাবে দখল করে ব্যবসা হচ্ছে। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর রোষের মুখে পড়তে হয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকের সে অভিজ্ঞতাও হয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো রয়েছে, অথচ এসব নিয়ে পুরসভা কিংবা প্রশাসন কারো মাথাব্যথা দেখছি না। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সভাপতি দীপেন চন্দ বলেন, “পুরসভা ও প্রশাসন দুই মহলের তপরতার অভাবে জবর দখলের সমস্যা বেড়েছে। দ্রুত ওই সব জায়গা দখলমুক্ত করার ব্যাপারে অভিযান চালানো দরকার।” বাসিন্দাদের ওই ক্ষোভের যৌক্তিকতা উড়িয়ে দিতে পারছেন না কোচবিহারের পুরসভা ও প্রশাসনের কর্তারাও। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু বলেন, “বছর খানেক আগেও শহরের ফুটপাথ রাস্তা দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হয়েছিল। বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে ফের সমস্যা তৈরি হয়েছে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অভিযান চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে।”
কোচবিহার সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহাও সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। মহকুমাশাসক বলেন, “নাগরিক সমাজের বিভিন্ন মহল থেকেও ফুটপাথ ও রাস্তা দখল ঘিরে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই পুরসভা পুলিশ ব্যবসায়ী সমিতি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল কে নিয়ে ওই সমস্যা মেটাতে বৈঠক করে অভিযানের রুপরেখা চূড়ান্ত করতে চাইছি।” প্রশাসন সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২৪ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার সদর মহকুমা শাসকের দফতরে ওই বৈঠক হবে। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অ্যান্ড কমার্স সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেছেন, “জনসংখ্যা ও যানবাহন ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় রাস্তা ফুটপাথের ওপর চাপ বাড়ছে। রাস্তা ফুটপাথ দখল করে কাউকে ব্যবসা করতে বলি না। পুরসভা ও প্রশাসন নজরদারি রাখলে সমস্যা হত না।” |