সড়কের পর এ বার পানীয় জল। পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের গ্রামীণ প্রকল্পগুলির জন্য অর্থের দাবিতে ফের কেন্দ্রের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত তথা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। পানীয় জলের ক্ষেত্রে রাজ্য যে ভিশন-২০২০ প্রকল্প নিয়েছে তার প্রেক্ষিতে এ দিন কেন্দ্রের কাছে প্রায় হাজার কোটি টাকা দাবি করে রাজ্য। যদিও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও স্পষ্ট আশ্বাস দেওয়া হয়নি রাজ্যকে।
সপ্তাহখানেক আগে রাজ্যের ১০০ দিনের কাজ ও গ্রামাঞ্চলের সড়ক উন্নতিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশের কাছে দরবার করেছিলেন সুব্রতবাবু। সে দিন সন্ধ্যাতেই রাজ্যকে চিঠি লিখে জয়রাম জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের শর্ত মানলে তবেই রাজ্য টাকা পাবে। আজ অবশ্য নানা রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রীদের বৈঠকে সেই ধরনের কোনও আশ্বাসও দেননি কেন্দ্রীয় পানীয় জল ও পয়ঃপ্রণালী মন্ত্রী ভরতসিংহ সোলাঙ্কি। মন্ত্রক সূত্রের খবর, কেন রাজ্য ওই সাহায্য চাইছে তা বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য সুব্রতবাবুকে আগামী মাসে ফের ডেকে পাঠিয়েছেন ভরতসিংহ।
আজ বৈঠকে রাজ্য জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের পানীয় জলে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডের সমস্যা রয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার রাজ্যের সব মানুষকে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে পরিস্রুত পানীয় জল দিতে ভিশন-২০২০ পরিকল্পনা নিয়েছে। এই পরিকল্পনায় প্রতি দিন প্রত্যেক ব্যক্তি ৭০ লিটার পরিস্রুত জল পাবেন। প্রকল্প রূপায়িত করতে রাজ্যের ২১ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। প্রকল্পের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্ক যাতে ঋণ দিতে রাজি হয় তাই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপও দাবি করেন সুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই ওই প্রকল্পের প্রথম পর্বের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। সুব্রতবাবুর কথায়, “এই কাজের জন্য প্রয়োজন প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা।” কিন্তু অর্থের অভাব থাকায় ওই কাজ একা রাজ্যের পক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই ওই প্রকল্প রূপায়ণে আজ কেন্দ্রের কাছে এক হাজার কোটি টাকা সাহায্য চান সুব্রতবাবু। পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের ৮০টি ব্লকে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল প্রকল্প হাতে নিতে চলেছে রাজ্য। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ৮০টি ব্লকের আওতায় রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ , বর্ধমান, হুগলির মতো জেলাগুলি।
কেন্দ্রীয় সাহায্যের শিকে কি ছিঁড়বে রাজ্যের ভাগ্যে?
এর আগে পানীয় জল প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের সাহায্যের অনুপাত ছিল ৭৫:২৫। কিন্তু বর্তমানে রাজ্য ও কেন্দ্র সমহারে অর্থ দেয়। আজ যথারীতি পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য মন্ত্রীর ধাঁচেই পানীয় জলের ক্ষেত্রেও ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় অনুদান দেওয়ার দাবি জানান সুব্রতবাবু। কিন্তু কেন্দ্র কি ওই দাবি মানবে? জবাবে সুব্রতবাবু বলেন, “সোলাঙ্কি আমাদের দাবি শুনেছেন। রাজ্যের ভিশন-২০২০ পরিকল্পনা মন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। দেখা যাক কেন্দ্র কী দেয়।”
|
তৃণমূল সমর্থিত কর্মী ইউনিয়নের ঘেরাও-অবস্থানের জেরে পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক বাতিল হয়ে গেল। মঙ্গলবার ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থায়ীকরণ-সহ নানা দাবিতে উপাচার্যের দফতর ঘেরাও করে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। এ দিন বিভিন্ন দাবিতে উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীরাও। তাঁদের মূল দাবি, ৬০ বছর পর্যন্ত কাজের নিশ্চয়তা দিতে হবে। উপাচার্য সমীরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিকেল ৫টা নাগাদ ঘেরাও ওঠে। ঘেরাওয়ের জেরে এ দিন এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক বাতিল হয়। ব্যাহত হয় পরীক্ষার ফলপ্রকাশের কাজকর্মও। দাবিদাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে চাননি। |