সরস্বতী পুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে গন্ডগোলের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হোগলবেড়িয়ার মানিকনগর গ্রামের হিরপাড়া। সোমবার রাতে কয়েকজন গ্রামবাসী পুলিশকে বেধড়ক মারধর করে। লাঠি, শাবল, বাঁশ ও ইটের আঘাতে আহত হন মানিকনগর ক্যাম্প ও হোগলবেড়িয়া থানার ৬ জন পুলিশকর্মী। এক কনস্টেবল ভর্তি করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। তাঁর মাথায় ১২টি সেলাই হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি ওই রাতে ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় ক্যাম্প ও পুলিসের একটি গাড়িতে। এক এনভিএফ কর্মীর কাছ থেকে রাইফেলও কেড়ে নেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় বিশ্বজিত্ সরকার-সহ ওই এলাকার অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যে পর্যন্ত রামানুজ বিশ্বাস, উত্তম ঢালি, তাপস সরকার ও সিদ্ধেন মণ্ডল নামে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, “সরস্বতী পুজোর ভাসানে দু’টো গাড়ি ভাড়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল শুরু হয়। তা ঠেকাতে গেলে পুলিশকর্মীদের মারধর করে গ্রামের কিছু লোক। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শীঘ্রই বাকিদের ধরা হবে।”
পুলিস জানায়, সোমবার প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে দু’টো গাড়ি ভাড়া করে পুজো উদ্যোক্তারা। তার মধ্যে একটি গাড়িতে প্রতিমা তোলা হলেও অন্য গাড়িটিকে ফিরে যেতে বলা হয়। ওই গাড়ির চালক ভাড়া দাবি করলে তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গন্ডগোলের সূত্রপাত এখান থেকেই। এরপর গাড়ির চালক স্থানীয় ক্যাম্পে বিষয়টি জানালে পুলিশ মারমুখী কয়েকজন গ্রামবাসীকে থামিয়ে ওই গাড়ি চালককে চলে যেতে বলে।
পুলিশ জানায়, এরপরেই হিরপাড়ার বেশ কিছু লোক ক্যাম্প ভাঙচুর করে। পাশাপাশি ক্যাম্পের পুলিশকে মারধরও করে। খবর পেয়ে হোগলবেড়িয়া থানার ওসি অভিজিত্ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান করিমপুরের সিআই আবু সেলিম ও তেহট্টের এসডিপিও সুনীল শিকদার। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। চলছে টহলদারি। মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল গোটা গ্রাম সুনশান। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কোনও কথা বলতে চাইছেন না। |