|
|
|
|
বাঙালি শিক্ষকের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রযুক্তি শিক্ষা
স্বপন সরকার • পটনা |
এক সময় বিহারে ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি ছিল না। পরীক্ষা ক্ষেত্রে মানা হতো না সেমিস্টার পদ্ধতিও। বিভিন্ন কলেজে পরীক্ষা নেওয়া হতো বিভিন্ন সময়ে। পরীক্ষায় সমতা না থাকায় ভুগতে হত ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ছেলেমেয়েদের। নিজের রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আকর্ষণ হারিয়েছিল পড়ুয়ারা। তারা পাড়ি দিত ভিন রাজ্যে।
এই পরিস্থিতি বদলে গেল ধীরে ধীরে। সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, অধ্যাপত শম্ভুনাথ গুহ এবং আর্যভট্ট নলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। নীতীশের ইচ্ছায় এবং শম্ভুনাথবাবুর উদ্যোগে ২০১০ সালে তৈরি হল আর্যভট্ট নলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। একই ছাতার তলায় নিয়ে আসা হল রাজ্যের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল কলেজগুলিকে। ঢেলে সাজা হল পাঠ্যক্রম, পরীক্ষা ব্যবস্থা। চালু হল সেমিস্টার পদ্ধতি। একই রুটিনে, একই সময়ে রাজ্যের সব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শুরু হল পরীক্ষা। পরীক্ষা সূচি তৈরি হল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পাঠ্যক্রমের ক্যালেন্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। |
অধ্যাপক শম্ভুনাথ গুহ। |
আসনে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজে ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ক্ষমতায় আসার পরেই বুঝেছিলেন, এই সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময় সূচী মেনে ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী চাইলেন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল কলেজগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার দায়িত্ব দিলেন পটনার বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ শম্ভুনাথ গুহকে। গড়ে উঠল নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা-উপাচাযর্র্ শম্ভুনাথ গুহের কথায়, “এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন রাজ্যের সব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিক্যাল কলেজগুলির দেখভাল করছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে নিয়মিত ভাবে একই দিনে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে ধীরে ধীরে ফিরে আসছে বিশ্বাস এবং ভরসা। সিলেবাসেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।” এই নলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েই বিহারে প্রথম ‘ন্যানো টেকনোলজি’ পড়ানোর ব্যবস্থা হতে যাচ্ছে। স্নাতোকোত্তর এবং পিএইচডি দুই শাখাতেই থাকবে এই বিষয়ে লেখাপড়ার সুযোগ। ইতিমধ্যেই এই খাতে বিহার সরকার বিশেষ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। ভাগলপুর সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ অচিন্ত্যর বক্তব্য, “আগে পরীক্ষার কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি ছিল না। এখন সারা রাজ্যে একই সময়ে এই পরীক্ষা হচ্ছে। এটা যেমন আমাদের পক্ষে ভাল হয়েছে, অন্য দিকে পড়ুয়ারদেরও সুবিধা হয়েছে। তারা রাজ্যের কলেজগুলিতে লেখাপড়ার সুযোগ নিতে পারছেন।” নালন্দা কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সরকারি এই কলেজটির অধ্যক্ষ চন্দ্রভূষণ মাহাতোর কথায়, “আর্যভট্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ন্তভুক্ত হওয়ার পরে সার্বিক ভাবে সমস্ত প্রক্রিয়ায় একটা শৃঙ্খলা এসেছে।” |
|
|
|
|
|