|
|
|
|
দাঙ্গার কালি মুছলে তবে মার্কিন ভিসা মোদীকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য যখন নরেন্দ্র মোদীর নাম উঠে আসছে, তখনই দাঙ্গার বিতর্ক ফের উঠে এল মার্কিন মুলুক থেকে। গুজরাত দাঙ্গা মামলার নিষ্পত্তি না হলে মোদীকে ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে না বলে জানাল আমেরিকা।
মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট রবার্ট ব্লেক এক টেলিভিশন চ্যানেলে জানিয়েছেন, “গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে ভিসা মঞ্জুর করার ব্যাপারে আমেরিকার নীতি বদল হয়নি। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার প্রশ্ন উঠছে না। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা তাঁর বিরুদ্ধে মামলার নিষ্পত্তি করলে তবেই আমরা বিষয়টি পুনবির্বেচনা করতে পারি।” ব্লেক অবশ্য জানিয়েছেন, “যে কেউই মার্কিন ভিসার আবেদন করতে পারেন। কিন্তু সেটি অনুমোদন হবে কি না, তা অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করছে।”
গত অক্টোবরে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রবার্ট ব্লেকই জানিয়েছিলেন, “গুজরাতের সঙ্গে আমেরিকা সুসম্পর্ক বজায় রাখে। আমেরিকার কাছে গুজরাত গুরুত্বপূর্ণ বাজার।” সেই সময় ব্লেকের এই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা হয়েছিল, গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার পর আমেরিকা মোদী-বয়কটের পথ থেকে সরে আসছে। গুজরাতে তৃতীয় বার জয়ের পর এ বছরের গোড়ায় মোদী যে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এর আয়োজন করেছিলেন, সেখানেও ইন্দো-মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিরা সামিল হন। এই দলের রন সমার্স মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নও মোদীর বিরুদ্ধে দশ বছরের বয়কট তুলে নিয়েছে। ইইউ দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের মোদী-মুখী করতে মধ্যস্থতা করেন ভারতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত মাইকেল স্টেইনার।
যদিও গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার বিষয়ে এই দেশগুলি দরাজ সার্টিফিকেট দেননি মোদীকে। এই প্রসঙ্গে তারা বার বার বলেছে, “শুধু ভারতই নয়, গোটা দুনিয়া জানতে চায়, ২০০২ সালের ঘটনার জন্য দায়ী কে। ভারতীয় বিচারব্যবস্থা ধীর গতিতে চললেও তা বিফলে যায় না।” এই পরিস্থিতিতে রবার্ট ব্লেকের মন্তব্য কিছুটা অক্সিজেন জোগাল কংগ্রেসকে। বিজেপি অবশ্য ঘটনাটি লঘু করে দেখাতে চেষ্টা করছে। দলের এক নেতা বলেন, “নরেন্দ্র মোদী বলেননি, তিনি আমেরিকার ভিসা চান। ফলে ভিসা মঞ্জুর হবে কি না, বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।”
তবে বিজেপির একাংশ ব্লেকের এই মন্তব্যে অখুশি নয়, বিশেষ করে যাঁরা মোদীকে দলের মুখ করতে নারাজ। তাঁদের মত, মোদীকে তুলে ধরলেই গোধরার ভূত তাড়া করবে। তিনি নিজেকে অটলবিহারী বাজপেয়ী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও, দাঙ্গার কলঙ্ক ঘুচবে না। ইতিমধ্যেই মোদীর নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হওয়ায় ঘরে-বাইরে মোদী-বিরোধী শক্তিগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে দলের একটি বড় অংশের চাপের কথা মাথায় রেখে এখন মোদীর বিপক্ষেও কথা বলা সম্ভব নয় বিজেপি নেতাদের পক্ষে। |
|
|
|
|
|