স্কুলে শিক্ষানুরাগী নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাল তৃণমূলই
শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি নির্বাচন নিয়ে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলে ওই নির্বাচনে জেলা তৃণমূল নেতা সুশান্ত ঘোষকে ৭-৪ ভোটে হারিয়ে দেন দলেরই শহর কমিটির প্রাক্তন সদস্য থাকহরি ঘোষ। আর এক তৃণমূল নেতা তথা অভিভাবক প্রতিনিধি সুব্রত কুশারীর ক্ষোভ, “সিপিএমের সমর্থন নিয়ে দলেরই একটি গোষ্ঠী সুশান্তবাবুকে হারিয়েছে।”
কিছু দিন আগে ওই স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে তৃণমূলেরই ছয় প্রার্থী জিতেছিলেন। তাঁরা ছাড়াও তিন শিক্ষক প্রতিনিধি, এক শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি ও প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি নির্বাচনে ভোট দেন। এই ১১টি ভোটের মধ্যে সাতটি পান থাকহরিবাবু। বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর ক্ষোভ, তিন অভিভাবক প্রতিনিধি অভিজিৎ রায়, আশিস সরকার ও তারক রুদ্র তো তাঁকে ভোট দিয়েছেনই। বাম শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র সদস্য স্বপন বিশ্বাস ও সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়, সিপিএম সমর্থিত শিক্ষাকর্মী সংগঠনের সদস্য রবীন্দ্রনাথ বেসরা এবং প্রধান শিক্ষকের ভোটও তাঁর পক্ষে গিয়েছে।
অন্য তিন অভিভাবক প্রতিনিধি সুব্রত কুশারী সুদিন চৌধুরী ও সোমা মজুমদার এবং শিক্ষক প্রতিনিধি জয়দেব কুন্ডু সুশান্তবাবুকে ভোট দেন। তবে মঙ্গলবার এই ভোট দিতে আসেননি মহকুমাশাসক-উত্তর (পদাধিকার বলে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি জেলাশাসকের প্রতিনিধি তিনি), সহ-সভাপতি তথা বর্ধমানের পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। সুশান্তবাবু নিজেও স্কুলে আসেননি।
প্রধান শিক্ষকের কথায়, “থাকহরিবাবু এক জন যোগ্য সংগঠক। নিজেও একজন শিক্ষাব্রতী। তাই শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি হিসেবে তাঁর নির্বাচনে আমি খুশি।” এবিটিএ সদস্য হয়েও কেন দুই শিক্ষক তৃণমূলের লোককে ভোট দিলেন? স্বপনবাবু ও সৌমেনবাবুর দাবি, “যোগ্য হিসেবেই স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক মনোনিত করেছেন। আমাদের সঙ্গে মনোনীত হন তৃণমূলের জয়দেববাবুও। এ দিনও যোগ্য প্রার্থীকেই ভোটে জিতিয়েছি আমরা। রাজনীতির রং দেখিনি।” থাকহরিবাবু বলেন, “ আমি ব্যক্তিগত ভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি হোক, তা চাই না। যিনি যে দলেরই হোন, আমি সকলের সহযোগিতা নিয়ে চলব।”
কিছু দিন আগেই বর্ধমানের হরিজন উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ভাবেই সিপিএমের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠন প্রতিনিধিদের ভোটে শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির পদে দলের প্রার্থীকে পরাজিত করেন তৃণমূলের এক নেতা। এ বার বর্ধমানের নামি স্কুলেও সেই ছক দেখে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ উদ্বিগ্ন। তাঁদের মতে, দলের একাংশ যে সিপিএমের সঙ্গে প্রকাশ্যেই হাত মিলিয়ে চলছে, এই নির্বাচনগুলি থেকে তার প্রমাণ মিলেছে। দলের উচিত, অবিলম্বে ওই ‘বিশ্বাসঘাতক’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুজিত ঘোষের মতে, “আমাদের দলের অন্দরে যে সিপিএমের লোকেরাই রাজত্ব চালাচ্ছে, সেটা বারবার প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।” তৃণমূলের অন্যতম জেলা পর্ববেক্ষক তথা রাজ্য নেতা অলোক দাস বলেন, “সুশান্তবাবু আমাদের পুরনো নেতা। সিপিএমের লোকেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। আমরা ঘটনাটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কে বা কারা এই কাজে লিপ্ত, সে ব্যাপারে খোঁজও নেওয়া চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.