জেল হেফাজতের আসামি ‘নিখোঁজ’, রিপোর্ট চাইল কোর্ট
জেল হেফাজতে থাকা তিনটি খুনে অভিযুক্তের খোঁজ মিলছে না। কোথায় রয়েছে সেই আসামি, তা জানানোর জন্য বর্ধমান সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও কাটোয়া উপ-সংশোধনাগারের জেলারকে নির্দেশ দিলেন কাটোয়া আদালতের এসিজেএম অঞ্জনকুমার সরকার। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি নির্দেশ দেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ ব্যাপারে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে।
কাটোয়া আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রবীর রায় বলেন, “পরপর দু’টি তারিখে ওই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করাতে পারেননি জেল কর্তৃপক্ষ। কেন তাকে হাজির করানো গেল না, সে বিষয়েও আদালতে কিছু জানানো হয়নি। বিচারক তাই জেল কর্তৃপৗঁরে কাছে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছেন।” পুলিশ জানায়, ওই আসামীর নাম সাদ্দাম শেখ। বাড়ি কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামে। ইদানীং সে থাকত কাটোয়া শহরের কেশিয়ায়। তার বিরুদ্ধে তিনটি খুনের মামলা ও একটি কিশোর অপরাধের মামলা রয়েছে।
কাটোয়া থানা সূত্রে জানা যায়, কেশিয়ার রহিম শেখকে খুনের অভিযোগে গত ৩ জানুয়ারি সাদ্দাম শেখ ও তাঁর বাবা জঙ্গল শেখকে গ্রেফতার করা হয়। চার দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পরে কাটোয়া আদালত সাদ্দামকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। জেল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানে জুভেনাইল বোর্ডে হাজিরার দিন ছিল ১৪ জানুয়ারি। কাটোয়া উপ-সংশোধনাগার সমস্ত মামলার কাগজপত্র-সহ সাদ্দামকে ১৩ জানুয়ারি বর্ধমান সংশোধনাগারে পাঠায়। পর দিন জুভেনাইল বোর্ড সাদ্দামকে উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহে ধ্রুবাশ্রমে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ২২ জানুয়ারি ফের বোর্ডের সামনে সাদ্দামকে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো ১৬ জানুয়ারি বর্ধমান সংশোধনাগার সাদ্দামকে ধ্রুবাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধ্রুবাশ্রম কর্তৃপক্ষ ২২ জানুয়ারি সমস্ত মামলা সমেত সাদ্দাম শেখকে বর্ধমান জুভেনাইল বোর্ডে হাজির করে। কিশোর অপরাধের মামলার ক্ষেত্রে জুভেনাইল বোর্ড সাদ্দামকে জামিন দেয়। এর পর থেকেই সাদ্দামের আর খোঁজ মিলছে না। কাটোয়া থানায় তিনটি খুনে অভিযুক্ত সাদ্দামকে ৩১ জানুয়ারি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করাতে পারেননি জেল কর্তৃপক্ষ। সরকারি আইনজীবী প্রবীরবাবু জানান, এর পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক। রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আদালত জানিয়েছে। ধ্রুবাশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ জানুয়ারি বর্ধমানে পাঠানোর সময়ে সাদ্দামের বিরুদ্ধে কী কী মামলা রয়েছে, তা আলাদা কাগজে লিখে পাঠানো হয়েছিল। সে দিনের পরে অবশ্য সাদ্দাম আর ধ্রুবাশ্রমে ফিরে আসেনি।
তা হলে সাদ্দাম গেল কোথায়? কাটোয়া আদালতে সাদ্দামের আইনজীবী ফরমান শেখের দাবি, “আমরা সরকারি ভাবে কিছু জানতে পারেনি। তবে আমার ধারনা, জুভেনাইল বোর্ড জামিন দেওয়ার পরে ভুল করে সাদ্দামকে ছেড়ে দেওয়া হয়।” জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা সাদ্দামের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, বর্ধমান থেকে সে কাটোয়া এসেছিল। তার পরে বাড়ি থেকে কয়েক হাজার টাকা নিয়ে ‘দিল্লি যাচ্ছি’ বলে বেরিয়ে যায়।”
গত ৩ জানুয়ারি সাদ্দাম গ্রেফতার হওয়ার দিনই কাটোয়ার হরিসভাপাড়ায় তার ভাই সাগর শেখকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। সাদ্দাম কাটোয়ায় ফিরলে নতুন করে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও আশঙ্কা পুলিশের। কাটোয়া থানার তরফে জানানো হয়, এই ঘটনা জানার পরেই নানা জায়গায় খবর পাঠানো হয়েছে। সেখানে সাদ্দামকে দাগী অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.