|
|
|
|
 |
দেড় মিটার রেললাইনই
ছিল না, জানালেন চালক
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
|
শুরু হল জ্ঞামেশ্বরী মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। সোমবার মেদিনীপুরের বিশেষ দেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম দাসের এজলাসে সাক্ষ্য দিলেন অভিশপ্ত ওই ট্রেনের চালক বিভয়কুমার দাস ও গার্ড শ্রীবাসচন্দ্র ঘোষ। বিভয়কুমারের বাড়ি ওড়িশার উদিতনগরে। আর শ্রীবাসবাবু পুরুলিয়ার কেতকার বাসিন্দা।
প্রথম সাক্ষী বিভয়: “১৯৭৩ সালে রেলের চাকরিতে যোগ দিই। ২০০৮ সাল থেকে মেল এক্সপ্রেস ট্রেন চালাতে শুরু করি। ২০১০ সালের ২৭ মে রাত ১০টা ৫ নাগাদ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। সব মিলিয়ে ২৪টি বগি ছিল। ট্রেন ছাড়ার আগে ব্রেক পাওয়ার, ইঞ্জিন প্রেশার-সহ সবই ঠিক ছিল। রাত ১২টা ৫০ নাগাদ ট্রেনটি খড়্গপুরে পৌঁছায়।”
সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বী: তারপর?
বিভয়: “খড়্গপুর স্টেশন থেকে ১২টা ৫৫ নাগাদ ট্রেন রওনা দেয়। খেমাশুলি পেরনোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে। জোর শব্দ হয়। ট্রেন নড়ে ওঠে। বেলাইন হয়। আমি ইমার্জেন্সি ব্রেক মারি। ৪ থেকে ৬ সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়ে।” |
জ্ঞানেশ্বরী শুনানি এক নজরে |
|
২০১০ সালের ২৭ মে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহা এবং খেমাশুলি স্টেশনের মাঝে লাইনচ্যুত হয় মুম্বইগামী জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। উল্টো দিক থেকে আসা একটি মালগাড়িও কয়েকটি কামরায় ধাক্কা মারে।
মৃত ১৫০, আহত প্রায় ২০০। তদন্তে নেমে সিবিআই ২৩ জনের নামে চার্জশিট দেয়। ধরা পড়েছেন ২১ জন। ১৯ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় চার্জগঠন। একমাত্র জামিনে মুক্ত বিমল মাহাতো। হীরালাল মাহাতো নামে এক জন ঘটনার সময় নাবালক ছিলেন। তার বিচার চলছে জুভেনাইল কোর্টে। |
|
আইনজীবী: কী দেখলেন তারপর?
বিভয়: সহ-চালক কেবিনের মধ্যে পড়ে রয়েছেন। ডাউন লাইনে মালগাড়ি ঢুকছে। দূরত্ব খুব বেশি নয়। লাল সিগন্যাল দিয়ে অ্যালার্ট করি। মালগাড়ির চালকও ইমার্জেন্সি ব্রেক মারেন। ডাউন লাইনের উপর এক্সপ্রেসের যে বগিগুলি চলে এসেছিল, মালগাড়ির ইঞ্জিন সজোরে সেইগুলোয় ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়।
আইনজীবী: কার সঙ্গে যোগাযোগ করেন?
বিভয়: খড়্গপুর এবং চক্রধরপুর কন্ট্রোল রুমে পরিস্থিতি জানাই। যাত্রীদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। রাত ৩টে ৫ নাগাদ খড়্গপুর থেকে রিলিফ ট্রেন পৌঁছায়।
আইনজীবী: কেন ট্রেন লাইনচ্যুত হল?
বিভয়: রেল লাইনের প্রায় দেড় মিটার অংশ ছিল না। প্যানড্রোল ক্লিপ খোলা ছিল। সে জন্যই দুর্ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অজয় ঘোষ ও অলোক মণ্ডল: পুলিশের কেউ কি সেই রাতে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন?
বিভয়: না, আসেননি।
আইনজীবী: কবে থেকে ফের কাজে যোগ দেন?
বিভয়: ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে মালগাড়ি চালাচ্ছি। রৌরকেল্লায় পোস্টিং।
আইনজীবী: ইংরেজিতে ঘটনার বিবরণ লিখতে পারেন?
বিভয়: না, পারি না।
আইনজীবী: প্যানড্রোল ক্লিপ চুরি করা যায় তো? রেল লাইনের অংশও কখনও কখনও চুরি যায় তো?
বিভয়: চুরি যায় কি না আমি জানি না।
দ্বিতীয় সাক্ষী শ্রীবাস: খেমাশুলি পেরনোর পরই জোর আওয়াজ হয়। চারিদিকে সে কী আর্তনাদ। মৃত্যু। বিভীষিকা। তার মধ্যেই ট্রেন থেকে নেমে সব খতিয়ে দেখি। ২৪ বগির মধ্যে ১১টি ঠিক ছিল। ১৩টি লাইনচ্যুত হয়।
সিবিআইয়ের আইনজীবী: কেন দুর্ঘটনা ঘটল?
শ্রীবাস: রেল লাইনে প্রায় দেড় মিটার অংশ ছিল না। বেশ কিছু প্যানড্রোল ক্লিপ খোলা ছিল।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী: প্যানড্রোল ক্লিপ, রেল লাইনের অংশ চুরি যায় কি?
শ্রীবাস: আমার জানা নেই।
আজ, মঙ্গলবার সাক্ষ্য দেওয়ার কথা দুর্ঘটনাগ্রস্ত জ্ঞানেশ্বরীর সহ-চালক ত্রিলোচন দেবাঙ্গনের। |
|
|
 |
|
|