সুগত মারজিৎ (টাকা রাখার আগে খোঁজখবর করা ভাল, ৩১-১) আমানত রাখার আগে চাক্ষুষ যাচাই বা র্যান্ডম অডিটের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু কোনও কোম্পানি আমানতকারীকে প্রকল্প পরিদর্শন করিয়েও যত টাকা তুলবেন তার জন্য সরকারি বা নিয়ন্ত্রকের সিলমোহর প্রয়োজন। আর সে জন্য অর্থ দফতরকে অবশ্যই কড়া হতে হবে। ধরা যাক, A কোম্পানির কোনও প্রকল্পের জন্য ১০ টাকা প্রয়োজন। রামকে প্রকল্প ঘুরিয়ে ১০ টাকা দেওয়ার কথা বলা হল। শ্যামকে ঘুরিয়ে ২০ টাকা দেওয়ার কথা হল। মধুর কাছ থেকে ১৫ টাকা সংগৃহীত হল। এ ভাবে প্রকল্প বহির্ভূত লাভ্যার্থে কোম্পানি নতুন প্রকল্পের জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণ করল আবার তা দেখিয়ে আমানত সংগৃহীত হল। প্রকল্প বহির্ভূত অর্থও কোম্পানি গোপন রাখল। এ ভাবে বেহিসাবি সম্পদ ফুলে ফেঁপে উঠল।
দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ চিট ফান্ডের আমানত সংগৃহীত হয় গ্রামগঞ্জ থেকে নেট ওয়ার্কের মাধ্যমে। গ্রামের জন প্রতিনিধি মুখিয়া, গণ্যমান্যরা এবং অবশ্যই শিক্ষিত বেকার সম্প্রদায় কোম্পানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করেন। এদের কথায় গ্রাম চলে, পার্টি চলে, ফলে গ্রামের মানুষ নির্দ্বিধায় এদের কথায় টাকা রাখেন।
তৃতীয়ত, নেটওয়ার্কের নিয়ম হল, এজেন্টদের প্রশিক্ষণের সময় নিকটবর্তী আত্মীয়দের নাম লিখতে বলা হয়। যারা প্রকৃত বিষয় থেকে ও তাদের কথায় অন্ধবিশ্বাস করেন। ফলে, তাদের কাছ থেকে অতি সহজে আমানত সংগৃহীত হয়ে থাকে। গ্রামের অশিক্ষিত খেটেখাওয়া মানুষ কিছু বোঝার আগেই নিজেদের প্রয়োজনের কথা ভেবে কখনও প্রলোভনে, কখনও পাড়ার ভাল ছেলে মনে করে সহজ বিশ্বাসে ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন। তা ছাড়া, গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের প্রতারক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নেই। তাই সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা হাতগুটিয়ে বসে মজা দেখতে পারে না। পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে আমানত সচেতন শিবির এবং প্রয়োজনে সরকার পক্ষ কিংবা গণ কমিটি গড়ে কোম্পানিগুলির প্রকৃত তথ্য জানার অধিকার দেওয়া হোক। দুরাচারী কোম্পানির কঠোর শাস্তি হোক।
অলোককুমার গিরি। বেলুড়, হাওড়া
|
• ‘ছাত্রভোট-বিধি তৈরি...’ (১৩-২) শিরোনামে আমার নাম করে যে বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। শনিবার কলেজ ছুটির পর কোনও বিজ্ঞপ্তিই ঝোলানো হয়নি। নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিজ্ঞপ্তি শনিবার (৯-২) কলেজ খোলার পরেই বিভিন্ন নোটিস বোর্ডে ঝোলানো হয়। এ বিষয়ে টেলিফোন মারফত প্রশ্ন করা হলে আমি সে কথা স্পষ্ট জানিয়েছিলাম।
বিজয় আচার্য। টিচার-ইন চার্জ, হরিমোহন ঘোষ কলেজ, কলকাতা
প্রতিবেদকের জবাব:
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিজয় আচার্যের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়। ওঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক না ডেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন স্থির করা হয়েছে এবং শনিবার কলেজের শেষে নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজয়বাবু জানান, প্রত্যেক বার এ ভাবেই নির্বাচন হয়। উনি কোনও অভিযোগ অস্বীকার করেননি এবং শনিবার সকালেই নোটিস ঝোলানো হয়েছিল বলে সে দিন কোনও দাবিও কিন্তু করেননি।
|
আমি জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর। দমদম নাগেরবাজার থেকে ৭০ কিমি পথ ট্রেনে অতিক্রম করার পর সাড়ে চার কিমির সাইকেল যাত্রা। তার পর সাইকেলসমেত নৌকায় নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে আরও দেড় কিমি সাইকেল ঠেঙিয়ে অবশেষে পৌঁছাই আমার কর্মস্থলে হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার ভবানীপুর ১ নং পঞ্চায়েতের শুলকুনি গ্রামের যোগেন্দ্র মাইতি সাধারণ বিদ্যামন্দির। প্রতিদিন ভাটার সময় কাটাখালি নদীর কর্দমাক্ত, অগভীর ও চোরাবালি যুক্ত নদীখাত সাইকেল ঘাড়ে নিয়ে পার হই। এই ভাবে যাত্রা আর ফিরতি-যাত্রা মিলিয়ে সারা দিনে লাগে সাড়ে ছয় ঘণ্টা। |
আমার স্কুলের ৯৫ ভাগ ছাত্রছাত্রী তফসিলি জাতি ও জনজাতির। বংশে প্রথম বার স্কুলজীবনে। অভিভাবকদের অধিকাংশই গরিব চাষি বা শ্রমিক। চেষ্টা করি নিজেকে উজাড় করে দিতে। সেখানেও বাধা। বিকেলে ট্রেন ধরার তাড়া। শিয়ালদা-হাসনাবাদ শাখায় বিকেল ৪টে ১৫-র পর পরবর্তী কলকাতাগামী ট্রেন ৫টা ৫০ মিনিটে।
ক্লান্ত অবসন্ন অবস্থায় বাড়ি পৌঁছে যখন কাত হয়ে পড়ি, ঠিক তখনই গিন্নি বলেন, নিজের একমাত্র কন্যাকে পড়াতে। মনে মনে প্রচণ্ড রেগে যাই। কখনও তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাই। একেই বোধহয় বলে, প্রদীপের নীচে অন্ধকার। আবার যে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার তাড়া।
এর উপর আবার সোনায় সোহাগা হতে চলেছে ‘শিক্ষার অধিকার’ আইনের ফাঁস। ৪৫ ঘণ্টা নাকি থাকতে হবে স্কুলেই। আমি তো না হয় মধ্যবয়স্ক। গৃহমন্ত্রীর ঘাড়ে সমস্ত দায়দায়িত্ব চাপিয়ে গ্রামেই সন্ন্যাসী হয়ে বাকি কর্মজীবনটা কাটিয়ে দেব বলে ভেবেছি। কিন্তু যে সমস্ত যুবক-যুবতী সদ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা হয়েছেন, তাঁরা কি ব্রহ্মচর্যের পালনের ব্রত নেবেন?
শান্তনু ভট্টাচার্য। কলকাতা-২৮ |