দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার আসানসোল-কলকাতা রুটের দূরপাল্লার বড় বাস দাঁড়ায় না পারাজ মোড়ে। তাতে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। তাঁদের দাবি, প্রতি দিনই প্রায় হাজার জন নিত্যযাত্রী ওই বাসস্টপ থেকে আসানসোল, দুর্গাপুর বা কলকাতায় যাতায়াত করেন। ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর ওই মোড়ে সব এক্সপ্রেস বাস দাঁড়াবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা পরিবহণ দফতর। তা সত্ত্বেও ওই মোড়ে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার আসানসোল-কলকাতা রুটের বাসগুলি দাঁড়াচ্ছে না বলে অভিযোগ।
পারাজের বাসিন্দা টোটন দে, অভিজিৎ হাজরারা জানান, স্থানীয় পারাজ, পূরষা, শিরোরাই, লোয়া, রামগোপালপুর, কৃষ্ণরামপুর ও উচ্চগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা ওই মোড় থেকে বাস ধরেন। গলসির দু’টি ব্লকের ওই সাতটি পঞ্চায়েত এলাকার হাজার খানেক বাসিন্দাকে রোজ ওই রুট ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু কলকাতা-আসানসোলের এসবিএসটিসি বাসগুলি সেখানে না দাঁড়ানোয় নিত্য দুর্ভোগের স্বীকার হতে হয় তাঁদের। ফলে দ্রুত আসানসোল বা কলকাতায় পৌঁছনো সম্ভব হয় না।
গত ৩০ অগস্ট ওই মোড়ে বাস দাঁড়ানোর দাবিতে প্রায় সাড়ে চারশো স্থানীয় মানুষ একটি গণস্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র জমা দেন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের কাছে। টোটনবাবুর দাবি, ২৮ নভেম্বর ওই স্টপেজে বাস দাঁড়ানোর নির্দেশ জারি করেন মদনবাবু। কিন্তু প্রায় চার মাস কেটে গেলেও এখনও বাস দাঁড়াচ্ছে না ওই মোড়ে।
অভিজিতবাবুর বক্তব্য, “প্রায়ই শোনা যায়, বিপুল ক্ষতি স্বীকার করে চালানো হচ্ছে সরকারি বাসগুলি। অথচ এখানে বাসগুলি প্রায় খালি গেলেও পারাজ মোড়ে দাঁড়াচ্ছে না।” তিনি জানান, গত বছর ২৮ অগস্ট জেলা পরিবহণ সংস্থাকে একই দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে তার কোনও উত্তর মেলেনি। অতিরিক্ত জেলাশাসক শরৎ দ্বিবেদী বলেন, “সাধারণত সরকারি বাসের স্টপেজ চেয়ে স্মারকলিপি পাঠালে আমরা তা রাখার চেষ্টা করি। তবে এ ক্ষেত্রে কেন এত দিনেও পারাজের মানুষের দাবি পূরণ করা হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”
সোমবার পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “কোথাও নতুন করে সরকারি বাসের স্টপেজ দেওয়ার দাবি উঠলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এক দল বলেন, নতুন স্টপেজের জন্য যাতায়াতের সময় বেড়ে যাচ্ছে। আর এক দল সরকারি বাস না থেমে বেরিয়ে গেলে রেগে যান। এই দু’পক্ষের টানাপোড়েনে পারাজে সরকারি বাস স্টপেজ দিতে সময় লাগছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই ওই স্টপেজে কলকাতা-আসানসোল রুটের এসবিএসটিসির বাসগুলি দাঁড়াবে।”
বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “ওখানে স্টপেজ দেওয়ার জায়গা রয়েছে কি না, প্রথমে তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার দুর্গাপুর ডিপোর ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একটি রিপোর্ট দিতে বলেছি।” তবে দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করে অধৈর্য হয়ে পড়েছেন পারাজের মানুষ। তাঁদের সাফ কথা, মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি না রাখলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। |