রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা নিয়ে এবারে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি, ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী মহারাষ্ট্রের ঠানেতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, কল্যাণীতে নয় রায়গঞ্জেই এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হবে।
রবিবার রায়গঞ্জে সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির বৈঠকে আসেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম। বৈঠকের পর তিনি বলেন, “চার বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রের ওই ঘোষণার পর কংগ্রেস ও তৃণমূল দীর্ঘদিন জোট গড়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই সময় কংগ্রেস এ রাজ্যে তৃণমূল পরিচালিত সরকারকে দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করাতে পারেনি। এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনীতি করতে কংগ্রেস আন্দোলনে নেমেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষই এর জবাব দেবেন।” সেলিমের দাবি, রাজ্যে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীন হাসপাতাল তৈরির জন্য রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করে। তৎকালীন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্দেশে ২০১০ সালে জেলা প্রশাসন পানিশালায় ১১০ একর জমি চিহ্নিতও করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ সূর্যকান্তবাবুকে জমি অধিগ্রহণের চূড়ান্ত সম্মতি না দেওয়ায় জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি।
যদিও সেলিমের বক্তব্যকে অসত্য বলে দাবি করে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিপিএম মিথ্যা কথা বলে রাজনীতি করতে এসেছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন বামফ্রন্ট সরকার কখনওই স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের চাপেই ২০১০ সালে বামফ্রন্ট সরকার জেলা প্রশাসনকে জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছিল।” তাঁর অভিযোগ, চাষিরা স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা একাধিকবার ঘোষণা করলেও ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে জমি অধিগ্রহণ করছে না। এ দিন মহম্মদ সেলিম জমি অধিগ্রহণ করা নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন কৃষকদের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে কৃষিজমি অধিগ্রহণ করবেন না। অথচ তাঁর মন্ত্রীসভারই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন রাজ্যে উন্নয়নের স্বার্থে জমির অভাব হবে না। রাজ্যের মানুষ দ্বিচারিতা মেনে নেবেন না।” এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সুবিধা পেতেই কংগ্রেস ও সিপিএম হাসপাতাল তৈরি নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচার শুরু করেছে। পানিশালা এলাকার চাষিরা জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্য সরকারকে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা জানালে রাজ্য সরকার অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” |