রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা অপ্রতুল। স্বল্প কিছু বেড থাকলেও বাড়ন্ত বেড কভার। প্রয়োজনের থেকে কম রয়েছে চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কর্মীর অভাবে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা পরিষেবা থেকে। এমনই বেহাল দশা ভরতপুর ব্লক হাসপাতালের। অথচ এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল আটটি অঞ্চলের লক্ষাধিক দরিদ্র কৃষিজীবী মানুষ। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি লীনা পাল বলেন, “হাসপাতালের দুরবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীরা বহুবার আমার কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু আমার কী ই বা করার আছে!” কৃষি প্রধান ভরতপুর এলাকার মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা ওই হাসপাতাল। ১৫ শয্যার ওই ব্লক হাসপাতালে গড়ে ৩৫- ৪০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। ফলে এক বেডে গাদাগাদি করে একাধিক রোগীকে থাকতে হয়। কোনও রোগীকে আবার তোষক পেতে মেঝেতেই শুয়ে থাকতে হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ জন করে রোগী হাসপাতালে বহির্বিভাগের চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু তাঁদের চিকিৎসার জন্য কোনও ঘরই নেই। হাসপাতাল চত্বরে থাকা জেলা পরিষদের অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে চলে বহির্বিভাগের চিকিৎসা। হাসপাতালে ৮ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ২ জন। বিএমওএইচ পলাশ পাল ও এক জন দন্ত চিকিৎসক। সালার হাসপাতালের দু’জন ডাক্তার ‘ডেপুটেশন’ এ মাঝেমধ্যে আসেন হাসপাতালে। প্রশাসনিক কাজে বিএমওএইচ-কে প্রায়ই কান্দি ও বহরমপুরে চক্কর কাটতে হয়। নিয়মানুযায়ী ৯ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৬ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থাকার কথা ১০ জন। রয়েছেন সাকুল্যে ৫ জন। ৪ জন সাফাইকর্মীর জায়গায় রয়েছেন মাত্র ২ জন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের সাফাই কাজ। ওয়ার্ডের বেডের নীচে নোংরায় ভর্তি। কস্মিনকালেও ঝাঁট পড়েনি সেখানে। হাসপাতালের পিছনেই জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। রক্তমাখা ব্যান্ডেজ, ব্যবহৃত তুলো, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জের ছড়াছড়ি। সব মিলিয়ে পূতিগন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে হাসপাতাল চত্বরে। এলাকার বাসিন্দা উত্তম দাস বা আজিজুল শেখরা বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে লাটে উঠেছে। কথায় কথায় ‘রেফার’ করাই কাজ হয়েছে ভরতপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের।” এ প্রসঙ্গে ভরতপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পলাশ রায় বলেন, “হাসপাতালের নতুন একটি ভবন তৈরির কাজ শেষের মুখে। তা তৈরি হয়ে গেলে সমস্যা মিটবে।” রেফার করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। চিকিৎসকেরা সাধ্য মতো চেষ্টা করেন।” |