ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে এক মনোরোগী চড়াও হলেন হাসপাতালের এক কর্মীর উপরে। আঘাত করে তাঁকে রক্তাক্ত করলেন। রবিবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিজনদের মধ্যে। কেন মনোরোগীদের ওয়ার্ডে যথাযথ পাহারার ব্যবস্থা ছিল না সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক চিকিৎসাধীন রোগী ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে রোগীদের নিরাপত্তার ছবিটা কতটা বেহাল, এই ঘটনা আরও এক বার তা সামনে আনল।
পাশাপাশি, এই ঘটনায় সামনে এসেছে আরও একটি প্রসঙ্গ। এ দিন খাবারের মান যথাযথ নয় বলে অভিযোগ তুলে উত্তেজিত হয়েছিলেন ওই মনোরোগী। ওয়ার্ডের অন্য রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রাও অভিযোগ করেছেন, মুখে তোলার অযোগ্য খাবার দেওয়া হয় তাঁদের। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ করেও কোনও ফল হয়নি। |
মনোরোগীর মারে আহত মেডিক্যাল কলেজের কর্মী। |
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে চাননি। সুপার দিব্যেন্দু গৌতম বলেন, “এক মনোরোগী হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে এমন করেছেন। এর সঙ্গে খাবারের মানের সম্পর্ক নেই।” কী ভাবে ওই রোগী ওয়ার্ডের বাইরে বেরিয়ে এমন রক্তারক্তি ঘটালেন? নিরপত্তাকর্মীরা কোথায় ছিলেন? সুপার জানিয়েছেন, সে বিষয়ে আজ, সোমবার সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ জানায়, ফৈজল আহমেদ নামে বছর সতেরোর ওই মনোরোগী দিন কয়েক আগে ভর্তি হন মেডিক্যাল কলেজে। তিনি গার্ডেনরিচের বাসিন্দা। অন্য রোগীর আত্মীয়েরা জানান, এ দিন সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁকে দুপুরের খাবার দিতে যান সুমন মুন্ডা নামে এক কর্মী। দু’তিন বার ডাকার পরেও খাবার নিতে রাজি হননি ফৈজল। সুমন জোর করে খাবার দিতে গেলে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন ফৈজল। হাতা দিয়ে সুমনের মাথায় সজোরে আঘাত করেন। ওয়ার্ডের অদূরে তখন কাঠের কাজ হচ্ছিল। সেই মিস্ত্রিদের বাটালি দিয়েও সুমনকে আঘাত করেন ফৈজল। আশপাশের ওয়ার্ডে খাবার দিতে আসা চার-পাঁচ জন কর্মী সুমনের চিৎকারে ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। পুলিশ এসে ফৈজলকে হেফাজতে নেয়। ফৈজলের বাবা জামিল আহমেদ বলেন, “ছেলে প্রায়ই খাবার খেতে চায় না। খাবারের মানও খুব খারাপ। অনেকেই অভিযোগ করেন। সকলের সই-সহ একটা লিখিত অভিযোগ নাসর্কে দিয়েছি। তিনি বলেছিলেন সেটি সুপারকে দেবেন।”
ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগী কী ভাবে বাইরে বেরিয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে পারেন, ওয়ার্ডের বাইরে নিরাপত্তাকর্মীরা তখন কী করছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলে অন্য রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। |