ঘন মেঘে ঢাকা আকাশ, রাত থেকে নাগাড়ে বৃষ্টির পরে রবিবার সকাল থেকে ইলশেগুড়ি সঙ্গে হিমেল হাওয়া। রবিবারও উত্তরবঙ্গের সর্বত্রই দিনের তাপমাত্রা কমেছে। বসন্তের শুরুতেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝার টানে, নীল আকাশে কালো মেঘের ‘অনুপ্রবেশ’ বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর।
শুক্রবার রাত থেকেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়। শনিবার রাতেও নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি সহ ডুয়ার্সে। রবিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে কোচবিহারেও। রাতে টানা বৃষ্টির পরে রবিবার সকালে শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে নাগাড়ে বৃষ্টি না হলেও দিনভরই ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। ফিরেছে হিমেল হাওয়ায়ও। আকাশে মেঘ জমে থাকায় দিনভর রোদের দেখা না মেলায় তাপমাত্রা কমে যায়, তার সঙ্গে নিম্নচাপের কারণে নতুন করে উত্তুরে হাওয়া ঢুকতে শুরু করায়, ফিরে এসেছে শীতের আমেজও। বৃষ্টি এবং উত্তুরে হাওয়ার জোড়া প্রভাবে এদিন উত্তরবঙ্গের ৬ জেলাতেই দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি কম ছিল। |
জলপাইগুড়িতে তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি,
২১ ডিগ্রি শিলিগুড়িতে।
এ সময়ে তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি থাকার কথা। রবিবারের আগে তাপমাত্রা ২৬-২৮ ডিগ্রিতে থাকলেও,
এ দিন বালুরঘাটে ২৭,
কোচবিহারে ২২, মালদহে ছিল ২৪ ডিগ্রি।
জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি। |
|
শীতের শেষে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এ ভাবে শনিবার থেকে শুরু করে টানা বৃষ্টির ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে এমন ঘটেনি বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। এ দিন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেছেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টা এই পরিস্থিতি থাকবে। দিনের তাপমাত্রা আরও কমে যেতে পারে। দু’দিন পর ফের কুয়াশা ফিরতে পারে উত্তরবঙ্গে।” আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শিলিগুড়িতে ১৮ মিলিমিটার এবং জলপাইগুড়িতে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মালদহে ১৭, কোচবিহারে ১৬ এবং বালুরঘাটে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সমতলের থেকেও পাহাড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটা বেশি ছিল।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, দার্জিলিঙে ৩৬, কালিম্পঙে ২৮ এবং সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কেন এই অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত? আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের আকাশে গত শুক্রবার থেকে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকতে শুরু করে। ঝঞ্ঝাটি ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ঝঞ্ঝার কারণেই উত্তরপ্রদেশের পূর্ব দিক থেকে শুরু করে নাগাল্যান্ড পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। এই অক্ষরেখার অবস্থান উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের উপর দিয়ে হওয়ায় নাগাড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সমতলে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় পাহাড় থেকে হিমেল হাওয়া ঢুকতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে। ফলে কমেছে দিনের তাপমাত্রাও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ বাবু বলেন, “সব জায়গাতেই ৬ ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমেছে। আকাশে মেঘ থাকায় দিনের তাপমাত্রা কমলেও রাতের তাপমাত্রা খুব কমবে না।” |