চেয়ারম্যান পদ থেকে নান্টু পালের অপসারণের পর শিলিগুড়ি পুরসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বোর্ড ছেড়ে তারা বেরিয়ে আসবেন কি না সেই চিন্তাই এখন তাড়া করছে তৃণমূলকে। চেয়ারম্যান পদে নান্টুবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে বামেরা। অনাস্থায় হেরে যান নান্টুবাবু। তার পর থেকেই এর জন্য কংগ্রেসকে বিঁধতে থাকে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের মধ্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একপক্ষ জোটের বোর্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাপ সৃষ্টি করছেন। অন্যপক্ষ ধীরে-সুস্থে বোর্ড ছাড়ার পক্ষে। প্রথমে তাঁরা পুরসভার তরফে দেওয়া গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করতে চান। দ্বিতীয় পদক্ষেপে মোবাইল ফোন ব্যবহারের খরচ নেবেন না। তৃতীয় পদক্ষেপে তাঁদের মেয়র পারিষদ এবং কাউন্সিলররা যে ভাতা পান তা ছাড়বেন। শেষ পর্যায়ে বোর্ড ছেড়ে বের হবেন। কিন্তু তা নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য হয়নি। সোমবার দলীয় অবস্থান জানানো হবে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।
পুরসভায় তৃণমূলের পরিষদীয় দলনেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে কোনও আপস করব না। প্রথমে সিপিএমের সমর্থনে মেয়র নির্বাচন হয়েছিল বলে আমরা বোর্ডে ছিলাম না। পরে সিপিএমের সংস্রব ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল বলেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পুর বোর্ডে আমরা যাই। ফের তারা রামধনু জোট করতে চেষ্টা করলে মেনে নেব না।” এ ব্যাপারে তাঁরা কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছেন এবং গাড়ি ব্যবহারের সুবিধা না-নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রথম পদক্ষেপ বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গৌতমবাবু।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার অবশ্য জানিয়েছিলেন, তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নন। কিন্তু নান্টুবাবুর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া তাঁরা মানতে পারেননি। কংগ্রেস ও মেয়রের সমালোচনা করায় তৃণমূল কেন জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে না সেই প্রশ্ন তোলেন শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “যা বলার আগেই বলেছি। মানুষ সবই বুঝছেন।” পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভার গাড়ি ব্যবহার না করলে আমাদের সমস্যা হবে না।” সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত, পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল, তৃণমূলের বরো কমিটির চেয়ারম্যান সমীরণ সূত্রধর, নিখিল সাহানিরা এ দিন প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। কৃষ্ণবাবু বলেন, “সোমবারই আমরা কাউন্সিলরদের অবস্থান ঘোষণা করব।” ডেপুটি মেয়র-সহ পূর্ত, শিক্ষা-সংস্কৃতি, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য, সাফাই, বিদ্যুত্ বিভাগের ৫ জন মেয়র পারিষদ তৃণমূলের। তাঁরা গাড়ি ব্যবহার না করলে পরিষেবা তদারকিতে সমস্যা হতে পারে বলে অনেকের অনুমান। |