মূল দু’টি স্তম্ভেই ফাটল
বিশেষজ্ঞ দলের মতের অপেক্ষায় সেতুর ভবিষ্যৎ
কাজ শুরু হওয়ার পরে কেটে গিয়েছে সাত বছর। কিন্তু হাসনাবাদে ইছামতী (কাঠাখালি) নদীর উপরে সেতুর ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আর এই অনিশ্চয়তার প্রধান কারণ, ইতিমধ্যেই সেতুর মূল দু’টি নির্মীয়মাণ স্তম্ভে ফাটল ধরা পড়েছে। এই অবস্থায় স্তম্ভগুলির উপরে আর সেতু তৈরি করা হবে কি না সেটাই প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। যদিও ওই সেতু তৈরির দায়িত্বে থাকা পূর্ত ও সড়ক দফতরের পক্ষ থেকে স্তম্ভগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে মুম্বই থেকে এক বিশেষজ্ঞ দলকে আনা হচ্ছে। আপাতত তাঁদের মতামতের উপরেই নির্ভর করছে সেতু তৈরি হবে কি না সেই প্রশ্নের উত্তর। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমায় হাসনাবাদ এবং পার হাসনাবাদের মধ্যে ইছামতী নদীর উপরে ২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। তিন বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেতুর শিলন্যাস করেছিলেন তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মাঝে কেটে গিয়েছে সাত সাতটা বছর। এর মধ্যে রাজ্যে ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে। সেতুর কাজে গতি আনতে ২০১২ সালের মাঝামাঝি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পূর্ত ও সড়ক দফতরের মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার হাসনাবাদে এসে বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে সেতুর উদ্বোধন করা হবে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ইতিমধ্যে বহুবারই স্থানীয় মানুষ সেতুর কাজে নিম্নমানের মালপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে অভিযোগ তোলেন। এই অবস্থায় নদীর দু’দিকে দু’টি স্তম্ভ তৈরির কাজ অনেকটাই এগোয়।
এই দুই স্তম্ভেই দেখা দিয়েছে ফাটল। ছবি: নির্মল বসু।
কিন্তু ফের কাজে বাধা পড়ে। গত বছর অগস্ট মাসের শেষ দিকে নদীতে মাছ ধরার সময় এক মৎস্যজীবীর চোখে পড়ে সেতুর নির্মীয়মাণ দু’টি স্তম্ভে বড় রকমের ফাটল। ক্রমে সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসে পূর্ত ও সড়ক দফতর। তড়িঘড়ি সরেজমিন তদন্তে আসেন সংশ্লিষ্ট দফতরের বাস্তুকাররা। তদন্তে দেখা যায়, স্তম্ভের যতটা অংশ জলের উপরে রয়েছে সেই অংশে ঢালাইয়ের সময় বালি পরিষ্কার না করায় জোড়ার মুখে বড় ফাঁক দেখা দিয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় কংক্রিট জলে ধুয়ে গিয়ে লোহার রড বেরিয়ে পড়েছে। অবস্থা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পূর্ত ও সড়ক দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার মলয় ঘোষ। ওই স্তম্ভের উপরে সেতু তৈরি করা যাবে কি না তা খতিয়ে দেখতে খড়্গপুর আইআইটি-র এক প্রতিনিধিদল হাসনাবাদে আসেন। সেতুর স্তম্ভ নির্মাণের সময় গাফিলতির কারণেই এই অবস্থা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। সেতুর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দলকে খবর দেওয়া হয়। পূর্ত ও সড়ক দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই প্রতিনিধি দল এসে সেতুর স্তম্ভের হাল খতিয়ে দেখে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেই মতোই কাজ করা হবে।
এই অবস্থায় সেতুর ভাগ্য যে ভাবে ঝুলে রয়েছে, তাতে নদীর দু’দিকের মানুষের আশঙ্কা সেতু বোধহয় তাঁদের পাওয়া হল না। অথচ গুরুত্বের দিক থেকে সুন্দরবন এলাকার মানুষের কাছে এই সেতুর প্রয়োজন খুবই। শুধু সুন্দরবন এলাকার মানুষের কাছেই নয়, সরাসরি সড়ক পথে সুন্দরবন এলাকায় পৌঁছে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কাছেও এই সেতুর সুবিধা অনস্বীকার্য। এখন দেখার, এই সব বিষয় বিবেচনা করে প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.