এক যুবককে গুলি করে খুন করে সড়কে ফেলে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার ঘটনাটি ঘটে রাত ন’টা নাগাদ বনগাঁর গোপালনগর থানার কদমতলায় বনগাঁ-চাকদহ সড়কে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম অভিজিৎ রায় ওরফে রবি (২৮)। বাড়ি স্থানীয় মেদিয়া বাজারে। তদন্তে নেমে এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্থানীয় জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য শ্যামল রায়ের ভাইপো অভিজিৎ।
|
অভিজিৎ রায়। |
রবিবার দুপুরে নিহতের বাড়িতে যান রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁর সাংসদ গোবিন্দ চন্দ্র নস্কর,বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও সুরজিৎ বিশ্বাস।
খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, “নিহত যুবক
ছিলেন আমাদের দলীয় কর্মী। ঘটনার পিছনে রয়েছে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। খুনিরা যাতে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়, তার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে। তিনদিন সময় চেয়েছেন পুলিশ সুপার।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীর মৃত্যু প্রসঙ্গে মেদিয়া বাজার কমিটির সম্পাদক দীপক মজুমদার বলেন, “এই খুনের প্রতিবাদে সোমবার অর্ধদিবস দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশের কাছে আমাদের দাবি, খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।” পুলিশ জানা গিয়েছে, মেদিয়া বাজারে পারিবারিক মুদির দোকান অভিজিৎদের। শনিবার সন্ধ্যায় দোকানে থাকাকালীন তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ফোন পেয়েই পরিচিত এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল নিয়ে কদমতলার উদ্দেশ্যে দ্রুত বেরিয়ে যান তিনি। রাত ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন পুলিশে। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্যে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনে তাঁরা রাস্তায় গিয়ে দেখেন এক রক্তাক্ত যুবকের দেহ চাদর দিয়ে ঢেকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে কিছু দুষ্কৃতী। অভিজিৎবাবু যে বাইকটি নিয়ে গিয়েছিলেন, ঘটনার পর থেকে সেটিও বেপাত্তা বলে দাবি পুলিশের। পাওয়া যায়নি তাঁর মোবাইলও। কিন্তু খোয়া যায়নি অভিজিৎবাবুর হাতের সোনার আংটি।
ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শুধুমাত্র লুঠের জন্য খুন করা হয়নি অভিজিৎবাবুকে। কিন্তু ঠিক কি কারণে খুন হলেন তিনি তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। রবিবার সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল নিহতের বাড়িতে ভিড় করেছেন প্রচুর স্থানীয় মানুষ। পরিবারের বড় ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে স্বভাবতই নেমেছে শোকের ছায়া। নিহত অভিজিৎবাবুর মা অণিমাদেবী বলেন, “ছেলের কোনও শত্রু ছিল বলে জানা নেই। যারা ওকে খুন করল তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই।” এর আগে শুক্রবার রাতে গোপালনগরের বহিলাপোতা গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ সেন নামে এক যুবককে বাড়ি ফেরার পথে গুলি করে খুনের চেষ্টা করে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সে এখন কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এলাকায় একের পর এক খুন, ডাকাতি, খুনের চেষ্টা, গুলি চলার মতো ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত বাসিন্দারা। দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য তাঁরা সাধ্যমত চেষ্টা করছেন বলে দাবি পুলিশের। |