|
|
|
|
তোপের মুখে জেলা পরিষদ |
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির দরপত্র বাতিল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। পরে সেই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়। অভিযোগ, নিয়ম মেনে দরপত্র চায়নি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। তাই প্রশাসনের নির্দেশে ওই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। কেন নিয়ম মেনে দরপত্র আহ্বান করা হল না, উঠছে সেই প্রশ্নও। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, “দরপত্রের প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনও অস্বচ্ছতা ছিল না।”
গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরআইডিএফ) এবং ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ডে (বিআরজিএফ) বরাদ্দ অর্থে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে জেলা পরিষদের। এর মধ্যে ৪৮টি কেন্দ্রের জন্য দরপত্র চাওয়া হয়েছিল গত ১০ জানুয়ারি (এনআইটি নম্বর- ২০১, ’১২-’১৩)। কিন্তু প্রক্রিয়া চলাকালীনই ৪ ফেব্রুয়ারি নোটিস দিয়ে জানানো হয়, দরপত্রের প্রক্রিয়া বাতিল করা হল। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ওই দিনই মেদিনীপুরে এসে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন বিভাগীয় মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। জানা গিয়েছে, নিয়ম মেনে যে দরপত্র আহ্বান করা হয়নি, সেই অভিযোগ পৌঁছেছিল প্রশাসনের কাছে। তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে আলোচনা হয়। জেলা পরিষদের ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার আবিরবরণ বসু রায়ের কাছেও ঠিক কী হয়েছে, জানতে চাওয়া হয়। একটি ‘নোট’ও তলব করা হয়। সেই মতো ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলাশাসককে জানান। তার আগেই অবশ্য দরপত্রের প্রক্রিয়া বাতিল বলে জানানো হয়। এ দিকে, ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার যে ‘নোট’ পাঠিয়েছেন, তা পছন্দ হয়নি সভাধিপতির। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বক্তব্য, ‘নোটে’ এমন কয়েকটি বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, যেগুলো উল্লেখ রাখা প্রয়োজন ছিল।
কেন এই প্রক্রিয়া বাতিল করা হল?
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে স্থানীয় দু’টি সংবাদপত্রে দরপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা থেকে প্রকাশিত কোনও সংবাদপত্রে সেই নোটিস দেওয়া হয়নি। অথচ, কাজটি প্রায় দু’কোটি টাকার। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “প্রক্রিয়ার শুরুতেই গলদ ছিল।” জেলা পরিষদের একাংশ আধিকারিক অবশ্য মনে করছেন, এ ভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি বাতিল না করলেও চলত। এমনিতে কাজের অনুমতি পেতে বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে যায়। তারপর সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য অর্থ মঞ্জুর হলে শুরু হয় কাজ। সভাধিপতির দাবি, “দরপত্র যে বাতিল করা হচ্ছে, তা আগে জানানো হয়নি। আমার সঙ্গে আলোচনাও করা হয়নি। বাতিল করার পর জানতে পেরেছি।” তাঁর বক্তব্য, জেলা প্রশাসন নিজেদের সিদ্ধান্তে এ কাজ করেছে। এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। তবে প্রশাসনেরই এক আধিকারিক বলেন, “ভুল হলে তার সংশোধন করতেই হবে। এ ক্ষেত্রে দরপত্রের প্রক্রিয়া বাতিল করতেই হত।” এক ধাপ এগিয়ে মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “জেলা পরিষদের বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রেই অস্বচ্ছতা রয়েছে। যা শুনেছি, শুরু থেকে নিয়ম মেনে দরপত্র আহ্বান করা হলে এ ভাবে তা বাতিল করতে হত না।” |
|
|
|
|
|