তাঁর হাতেই বান্ধবীর মৃত্যু হয়েছে কি না, অস্কার পিস্টোরিয়াসকে ঘিরে জোরাল হতে থাকা এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ আরও জটিল করে দিলেন প্রতিবন্ধী অ্যাথলিটের প্রিয় বন্ধু।
‘ব্লেড রানার’-এর ঘনিষ্ঠ সেই বন্ধু জাস্টিন ডেভারিস জানিয়েছেন, রিভা স্টিনক্যাম্পের মৃত্যুর পরপর ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র ভোররাতে তাঁকেই প্রথম ফোন করেছিলেন অস্কার। রাত ৩টে ৫৫ মিনিটে বন্ধুকে ফোনে যা বলেছিলেন, তাতে অস্কারের দিকে অভিযোগের তির আরও জোরাল হওয়ারই কথা। “আমার বেবি, আমি আমার বেবিকে মেরে ফেলেছি। ঈশ্বর আমাকে নিয়ে নিন।” শুনে কী বলেন তাঁর বন্ধু? “আমি হকচকিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কী বলছিস কী?” যে প্রশ্নে অস্কারের উত্তর ছিল, “একটা বিশ্রী দুর্ঘটনা হয়ে গিয়েছে। আমি রিভাকে গুলি মেরেছি।” ২৭ বছরের জাস্টিন যখন তাঁর বন্ধুর বাড়ি পৌঁছন, ততক্ষণে সেটা পুলিশের জিম্মায় চলে গিয়েছে। |
এর মধ্যেই আবার এই ঘটনা ঘিরে নতুন বিতর্ক দানা বাঁধছে। যার কেন্দ্রে রয়েছে অস্কারের বান্ধবীর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকান এক রাগবি প্লেয়ারের অতীত সম্পর্ক। জল্পনা চলছে, ২৪ বছরের ফ্রাঁসোয়া হুগার্ডের সঙ্গে রিভার সম্পর্কের জেরে মতবিরোধ হয় রিভা-অস্কারের। ওই রাগবি প্লেয়ার আবার অস্কারেরও বন্ধু। দীর্ঘ দিন ধরে ফ্রাঁসোয়া চিনতেন রিভা-কে। টুইটারের মাধ্যমে দু’জন নিয়মিত কথা বলতেন।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র সেই দুর্ঘটনার আরও তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। জানা গিয়েছে, বাথরুম থেকে বান্ধবীর রক্তাক্ত দেহ তুলে এনে তাঁকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন অস্কার। এরই মধ্যে আবার অস্কারের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে রক্তাক্ত একটি ক্রিকেট ব্যাট।
নতুন এই প্রমাণে অবশ্য গোটা ঘটনা আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। রিভার মাথার খুলি ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে অনুমান করা যেতে পারে যে, অস্কারই ওই ব্যাট দিয়ে রিভার মাথায় মারেন। আবার ওই ব্যাট দিয়েই রিভা আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে চেয়েছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মঙ্গলবার অন্য আদালতে নতুন করে শুনানি হবে অস্কারের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে প্রতিবন্ধী অ্যাথলিটের।
রিভার বাবা ব্যারি স্টিনক্যাম্প অবশ্য এ দিনই জানিয়ে দিয়েছেন, অস্কারের বিরুদ্ধে যা-ই অভিযোগ থাকুক, তাঁকে ঘৃণা করেন না তাঁরা। গত বছর নভেম্বর থেকে রিভার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অস্কারের। ব্যারি এ দিন বলেছেন, “অস্কারের মনের মধ্যে কী কী চলছে সেটা আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাই ওকে আমরা ঘৃণা করি না।” অস্কারের সঙ্গে তাঁর নিজের কোনও দিন দেখা না হলেও ব্যারি জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মাঝে মধ্যে ফোনে কথা হত অস্কারের। |