“সেলেব্রিটি ক্রিকেট লিগের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হওয়ার সব থেকে বড় সুবিধে হল, একটা নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন না করে নিছক দর্শক হিসেবে ম্যাচ উপভোগ করা যায়।” রবিবার দুপুরে হায়দরাবাদের লালবাহাদুর শাস্ত্রী স্টেডিয়ামে ঢুকে এটাই ছিল বিপাশা বসুর প্রথম লাইন।
“সব টিমেই আমার বন্ধুরা রয়েছে। আর সবাই চায় আমি ওদের টিমকে সাপোর্ট করি। তবে আমি বেশ হাসিমুখেই বলি যে, আমি তো কাউকে সাপোর্ট করতে পারব না। উৎসাহ দিতে পারি নিশ্চয়ই। ক্রিকেট খুব ভালবাসি। তাই বেশ মজা লাগছে খেলাগুলো দেখতে,” বললেন বিপাশা। আর কথা বলতে বলতেই চলে গেলেন বেঙ্গল টাইগার্সের ডাগআউটের দিকে। বনি কপূরের সঙ্গে কথা বলার আগে তাঁর চোখে পড়েন যিশু সেনগুপ্ত। এগিয়ে গিয়ে কথা বললেন। তারপর শুরু হল আড্ডা। দু’জন একসঙ্গে ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই পুরনো দিনের কথা উঠে আসে। আর উঠে আসে এই ম্যাচের প্রসঙ্গ। |
ততক্ষণে ম্যাচ শুরু হয়ে গিয়েছে। রীতেশ দেশমুখের টিম ‘বীর মরাঠা’ টস হেরে গিয়ে বেশ খুশি! কারণ তাঁরা ব্যাট করতে চেয়েছিলেন আর বেঙ্গল টাইগার্স অধিনায়ক জিৎ টস জিতে নিলেন ফিল্ডিং। ক্রিকেট-কাম-বলিউডি আড্ডা একই সঙ্গে জমে উঠল। কখনও বেঙ্গল টিমের মালিক বনি কপূরের সঙ্গে বিপাশা, কখনও মরাঠা অধিনায়ক রীতেশের স্ত্রী জেনেলিয়া-র সঙ্গে পাশাপাশি। জেনেলিয়া যে কাজের জন্য একদম মানানসই, ঠিক সেটাই তাঁকে দেওয়া হয়েছে চিয়ারগার্লের দায়িত্ব! এক মুহূর্তও বসেন না চেয়ারে। ফ্ল্যাগ হাতে সব সময় তৈরি নাচার জন্য। আর নাচের ফাঁকেই এমন লাফাচ্ছেন, যেন মনে হচ্ছে গ্যালন-গ্যালন এনার্জি ড্রিঙ্ক খেয়ে মাঠে ঢুকেছেন। খানিকটা মজা করেই তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, এত যে হাই-জাম্পে পারদর্শিতা দেখাচ্ছেন, অলিম্পিকে ভারতের হয়ে নামার কথা ভাবছেন নাকি? শুনে মুচকি হেসে জেনেলিয়ার উত্তর, “না, না। খুব আনন্দ হচ্ছে, তাই...।” |
আর এতটা খুশি কি রীতেশের ক্যাপ্টেন্সিতে টিম ভাল করছে বলে? আবার হাসি। আর তার পর বললেন, “শেষ দুটো মরসুমেও এ রকমই লাফিয়েছি। আর এখন বীর মরাঠা তো আমার সন্তানের মতো। এখন খেলা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না। ফাইনাল শেষ হলে শুটিংয়ের কথা ভাবব।” ও দিকে শ্রীদেবী বেঙ্গল টাইগার্সকে উৎসাহ দিতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত। কাঠফাটা রোদ, কিন্তু উৎসাহে খামতি নেই। তার মধ্যেই মেয়েকে ফোন করে মনে করিয়ে দিলেন, ডেন্টিস্টের কাছে যেতে যেন ভুল না হয়। মুহূর্তে আবার খেলায় মনোযোগ। “ভগবানকে ডাকছি যাতে আমরা জিততে পারি।”
সোমবার সকালে মুম্বইয়ে বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং। রবিবার রাতেই মুম্বই ফিরতে হবে। প্যাকিং বাকি। তাই স্বামী বনি কপূরকে অনুরোধ শ্রীদেবীর, যদি একটু হোটেলে ফিরে যাওয়া যায়। প্যাকিং-পর্ব মিটিয়ে আবার মাঠে ফিরবেন।
ফিরলেন যখন, ততক্ষণে তাঁর টিম ১৭০ তাড়া করতে নেমে গিয়েছে। বাউন্ডারি হলেই শ্রীদেবী ফ্ল্যাগ হাতে গলা ফাটাতে তৈরি। এমনকী বীর মরাঠার কেউ হাত থেকে বল ফসকালেও আনন্দের শেষ নেই। জিৎ, যিশু, স্যান্ডি, রাজা, জয়, সুগত, ইন্দ্রাশিস, দেবরাজ, অরিজিৎ, বিদেক আর ইন্দ্রজিতদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য সব সময় তৈরি।
তবু শেষরক্ষা হল না। ৩২ রানে হেরে গেল বেঙ্গল টাইগার্স। ইন্দ্রাশিস অবশ্য একটা ভাল ক্যাচ ধরে পুরস্কার পেলেন। ম্যাচের শেষে বেঙ্গল অধিনায়ক জিৎ বললেন, “আমরা ভাল খেলতে পারিনি। আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। কাল ভোরের ফ্লাইটে কলকাতা ফিরব। গিয়েই ‘বস’-এর শ্যুটিং।” টিম মালিক বনির ব্যাখ্যা, “বীর মরাঠা টি-টোয়েন্টি খেলেছে। আর আমরা খেললাম পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ।” যিশু-রাহুলদের চোখেমুখে মনখারাপের ছাপ। “ক্রিকেটটা ভালবাসি তো, তাই খারাপ লাগছে,” বলছিলেন যিশু।
টিমবাসে হোটেলে ফেরার আগে ইন্দ্রাশিস যিশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “কী যিশুদা, আজ রাতে পার্টি করবে তো?” একগাল হেসে যিশুর উত্তর, “হ্যাঁ, শুনলাম সলমন খানও আসবে। আজ হেরেছি। তবে সেটা এখন অতীত। সামনে আরও ম্যাচ আছে। সেগুলো ভাল খেলতে হবে।”
|