রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে এক প্রতিবেশী এসে খবরটা দিয়েছিল মাইককে। এক মুহূর্তও দেরি না করে গাড়িতে করে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন মাইক। সে, সপি অস্কার মাইক ও কেটের অত্যন্ত প্রিয় ও আদরের পোষা বিড়াল।
পশু চিকিৎসক পিটার হাওয়ার্থকে সংক্ষেপে ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেন মাইক “বাড়ির পাশের খেতে চাষবাস হচ্ছিল, তখনই কোনও যন্ত্রের নীচে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে অস্কারের। পিছনের দু’টি পা বাদ চলে গিয়েছে।” প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার পর পিটার ইংল্যান্ডের এক চিকিৎসক নোয়েল ফিৎজপ্যাট্রিকের কথা জানান মাইকদের। কুকুরের পা প্রতিস্থাপনের বিষয়ে নোয়েল দক্ষ ও অভিজ্ঞ।
যান্ত্রিক পদ্ধতিতে অস্কারের পা প্রতিস্থাপন অনেক অর্থের ও ধৈর্যের ব্যাপার। সর্বোপরি, নোয়েল রাজি হবেন কি না তা অনিশ্চিত। কিন্তু তবুও আশায় বুক বাঁধেন মাইক ও কেট।
নোয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি আগ্রহ দেখালে অস্কারের শারীরিক অবস্থার সব রকম পরীক্ষা করে তার রিপোর্টগুলি নোয়েলকে পাঠান পিটার। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন নোয়েল। টাইটানিয়াম ধাতুর দণ্ডের সঙ্গে হাড় ও দাঁতের যৌগ মিশিয়ে নকল পা তৈরি করেন তিনি, যেটা অস্কারের বাদ চলে যাওয়া পা দু’টির জায়গায় প্রতিস্থাপিত করা হবে।
২০০৯ সালের ১৩ নভেম্বর। ইংল্যান্ড থেকে নোয়েল জানান, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তিন ঘণ্টা ধরে চলেছে অস্ত্রোপচার। এর পর খুব ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে অস্কার। ২০১০-এর এপ্রিলে বাড়ি ফিরে আসে সে। অবিশ্বাস্য স্বাভাবিক পদক্ষেপে ঘোরাফেরাও করতে থাকে।
প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড অর্থ খরচ হয়েছিল পুরো প্রতিস্থাপন পদ্ধতিটিতে। কিন্তু মাইক ও কেটের মতো সাধারণ পরিবারের পক্ষে এই বিপুল খরচের ভার বহন করা সম্ভব ছিল না। হাজার চারেক পাউন্ড পাওয়া গিয়েছিল বিমা সংস্থার পক্ষ থেকে। বাকি খরচের ব্যবস্থা করে দেন নোয়েল নিজে।
এখন অস্কার সুস্থ। পা নিয়ে আর কোনও সমস্যা নেই তার। মাইক ও কেটের আদরে দিব্য দিন কাটাচ্ছে। কেট-মাইকের ভালবাসা আর নোয়েলের দক্ষতার কারণে অস্কার যে পৃথিবীর অন্যতম সৌভাগ্যবান বিড়ালদের মধ্যে এক জন, সে কথাও বলাই বাহুল্য। |