দলদাস হলে চলবে না, সতর্ক করলেন প্রাক্তনীরা
কোনও চাপের সামনে মাথা নোয়ানো নয়, সদ্যপ্রয়াত পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরীর ছবির সামনে দাঁড়িয়ে একযোগে ডাক দিলেন কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এবং বর্তমান।
রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে তাপসবাবুর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপনের ডাক দেন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকরা। কর্মরত কর্মীদের মধ্যেও অনেকেই মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রাক্তনীদের সঙ্গে সমাবেশে যোগ দেন। “রাজনৈতিক চাপে মাথা না ঝুঁকিয়ে প্রতি পদক্ষেপে স্রেফ আইনের শাসন মেনে চলুন,’’ পুলিশের মনোবল বাড়াতে এটাই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন তাঁরা।
যেমন, প্রবীণ ইনস্পেক্টর শিশির বন্দ্যোপাধ্যায়। সশস্ত্র পুলিশে কর্মরত ওই অফিসার মে মাসে অবসর নেবেন। তাপসবাবুর স্মরণে পথে নেমে কী বার্তা দিতে চান? বললেন, “আমার সহকর্মীদের বলব, নেতারা আসে-যায়! রাম চট্টোপাধ্যায় চলে গিয়েছেন। ফিরহাদ হাকিমও চিরদিন থাকবেন না। তাই তাঁদের ভৃত্য হয়ো না।” তাপসবাবুর মৃত্যু এবং তার পরের কয়েকটি ঘটনায় চিড় ধরেছে পুলিশের মনোবলে। শাসক দলের তরফে অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগে সরব পুলিশের একাংশ।
সহকর্মী-স্মরণে। রবিবার ধর্মতলায়।—নিজস্ব চিত্র
ঢিলেমি কাটিয়ে আইন মেনে পদক্ষেপ করতে সক্রিয় হয়েছিলেন রঞ্জিত পচনন্দা। কিন্তু তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে কোন কাজের কী পরিণাম হবে তা নিয়ে পুলিশের বিভিন্ন স্তরে অনিশ্চয়তা দানা বেঁধেছে। ফিরহাদ হাকিম দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করছেন বলে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করেছেন লালবাজারের অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা-কর্তা সমীর গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সুরজিৎ করপুরকায়স্থ দক্ষ অফিসার। তবে জানি না, কত দূর স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবেন।” সমীরবাবুর মতে, শাসক দল সব সময়ই পুলিশকে ব্যবহার করতে চায়। দলদাস হলে মুশকিল। রাজনৈতিক চাপের মোকাবিলা কারা করতে পারেন, কারা পারেন না, তা-ও ব্যাখ্যা করেন তিনি। ৯০-এর দশকে বউবাজার বিস্ফোরণের মতো ঘটনার তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “ভাল পদে নিয়োগের জন্য কোনও পুলিশ-কর্তা শাসক দলের উমেদারি করেন। শাসক দলও তাঁদের ব্যবহার করার চেষ্টা করে।” অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই তাঁর সঙ্গে একমত। কেউ কেউ বলছেন, চাপ কোন পথে আসতে পারে, সেটা পুলিশকর্মীদের নিজেদেরই বুঝে নিতে হয়। কলেজের গোলমালে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পছন্দ নয় প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার গদাইচাঁদ দে-রও। প্রধানত গদাইবাবুর ডাকেই এ দিন সমাবেশ হয়। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত আইজি প্রতিভানাথ সাহা, প্রাক্তন ডিসি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মুক্ত ঘোষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়রা পথে নামেন। মুক্তবাবু বলেন, “ভুললে চলবে না, পুলিশের রং হয় না।” এসেছিলেন তরুণ সাব-ইনস্পেক্টর মৃণালকান্তি বিশ্বাসও। তাপসবাবুর মৃত্যু বিঁধছে তাঁকে। বললেন, “কোনও সংঘর্ষে মৃত্যু হলে ভাবতাম না। আমি আত্মবিশ্বাসী, এই ধরনের পরিস্থিতিতে আইন মেনেই যা করার করব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.