সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র (সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিজ) চালু করতে চলেছে বিশ্বভারতী। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে ‘রবীন্দ্রনাথ ও ভারতীয় লোকবিদ্যা বিজ্ঞান’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভায় এ কথা ঘোষণা করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। লোকসংস্কৃতির গবেষণায় এই সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র বিশেষ গুরুত্ব দেবে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর। সুশান্তবাবু বলেন, “বিশ্বভারতীর সেন্টার ফর কালচারাল স্টাডিস-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হবে লোক সংস্কৃতি ও লোকবিদ্যা বিজ্ঞান। দু’ বার ইরান সফর এবং শিলাইদহে থাকার অভিজ্ঞতা রবীন্দ্রনাথকে সুফি আদর্শ, ভাটিয়ালি, কীর্তনের মতো লোকসংস্কৃতির সংস্পর্শে এনেছিল। যদিও শিক্ষার প্রসার, সামাজিক সমস্যা দূরীকরণ এবং যোগাযোগের মাধ্যম রূপে লোকবিদ্যার অবদান অপরিসীম। বর্তমানে যাত্রা, কীর্তন, ভাটিয়ালি, পালাগান, কবিগান কার্যত হারিয়ে যেতে বসেছে।” তাঁর সংযোজন, “আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তার সংরক্ষণ ও চর্চা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যোগাযোগের ব্যবস্থার ব্যবহারে লোকসংস্কৃতি, লোকবিদ্যার প্রচার এবং প্রসারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
প্রসঙ্গত, উনিশ শতকের শেষের দিকে লোকসংস্কৃতি নিয়ে চর্চা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। লোকসাহিত্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সম্পাদনা নিয়ে বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। উদ্যোক্তাদের পক্ষে আহ্বায়ক কৈলাশ পট্টনায়েক বলেন, “ভারতের লোকবিদ্যা বিজ্ঞানে রবীন্দ্রনাথের অবদান নিয়ে খুব কম আলোচনা হয়েছে। ওই অভাব পূরণ এবং বর্তমানে তার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে তিন দিনের এই আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ৪০ জন আলোচক এবং বেশ কিছু নবীন গবেষক যোগ দিয়েছেন।” এ দিন বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে রবীন্দ্রনাথের ‘লোকসাহিত্য’-এর হিন্দি অনুবাদ এবং ভোজপুরি, ওড়িয়া লোককথা নিয়ে দু’টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ছিলেন কর্নাটক লোকসাহিত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আম্বালিকে হিরিয়ানা প্রমুখ বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ।
অন্য দিকে, একাধিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক আদানপ্রদানের লক্ষ্যে দক্ষিণ-কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করল বিশ্বভারতী। সম্প্রতি উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের নির্দেশে এবং শিক্ষা সমিতির সিদ্ধান্তে দক্ষিণ কোরিয়ার ডঙ্গ-উক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশ্বভারতী ওই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অমৃত সেন বলেন, “ডঙ্গ-উক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশ্বভারতীর একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, সংস্কৃতি আদানপ্রদানের সঙ্গে সঙ্গে উভয় দেশের সম্পর্কও আরও সুদৃঢ় হবে।” সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক আলোচনাসভায় যোগ দিতে এসে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাবিদদের একাংশ যোগাযোগ করেছিলেন বিশ্বভারতীর সঙ্গে। |