অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা বৈঠক করে শিক্ষানুরাগী প্রার্থী পদে এক জনের নাম স্থির করেছিলেন। তৃণমূলের সমর্থনে আর কেউ ওই পদের জন্য মনোনয়ন দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত হলেও পরে দলের এক নেতা ভোটে দাঁড়িয়ে জিতে গিয়েছেন। এমনই অভিযোগ তুলে ওই নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত দুই অভিভাবক প্রতিনিধি।
বর্ধমানের শিবকুমার হরিজন বিদ্যালয়ে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ছ’টি আসনেই জয়ী হন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। তাঁদেরই দু’জন রিনা সরকার ও মিঠুন বৈরাগ্য গত শুক্রবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের কাছে পাঠানো ফ্যাক্সবার্তায় দাবি করেন, ছয় অভিভাবক প্রতিনিধি ও স্কুলে নির্বাচিত পাঁচ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী বৈঠকে বসে ঠিক করেন, শহরের তৃণমূল নেতা অনুপ মণ্ডলকে শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি পদে নির্বাচিত করা হবে। তাঁদের দাবি, জেলার অধিকাংশ নেতাই ওই পদে অনুপবাবুর নাম অনুমোদন করেন। ঠিক হয়, আর কেউ ওই পদে মনোনয়ন জমা দেবেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার নির্বাচনে দেখা যায়, অনুপবাবুর মনোনয়ন জমার পরেই শহরের আর এক তৃণমূল নেতা নিহার আদিত্য ওই পদে মনোনয়ন জমা দেন। নিহারবাবু ৬-৪ ফলে জেতেন।
জেলা স্যাগেশিয়াস টিচার্স অ্যান্ড এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক অনুপ ভট্টাচার্য বলেন, “নিহারবাবু আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে মনোনয়ন জমা দেন। আমরা মুকুলবাবুর কাছে ঘটনার কথা জানিয়েছি। আশা করি তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।” তাঁর আরও অভিযোগ, সিপিএমের লোকজনের সহায়তা নিয়েই নিহারবাবু ভোটে জিতেছেন।
নিহারবাবুর অবশ্য দাবি, “কারা আমাকে ভোট দিয়েছে জানি না। প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিস্থিতি তৈরি হলে ভোটে দাঁড়াব না বলেছিলাম। তা হবে না জেনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম।” তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস বলেন, “এ তো ভয়ঙ্কর ঘটনা। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দলকে সুপারিশ করব।” প্রধান শিক্ষক তথা এবিটিএ বর্ধমান শহর জোনাল কমিটির সদস্য অসিত সাধুর বক্তব্য, “দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বী ভোটে লড়লে আমাদের তো এক জনকে বাছতেই হবে। গোপন ব্যালটে কাকে ভোট দিয়েছি, বলব না।” শহরের এবিটিএ নেতা নুরুল হকের দাবি, “যা শুনেছি, যা গোলমাল হওয়ার, তৃণমূলের মধ্যেই হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।” |