কমিশনে যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস
পুলিশের বদলি নিয়ে রাজ্য জড়াল নির্বাচনী বিধিভঙ্গেও
ফের কাঠগড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ বার অভিযোগ নির্বাচনী বিধিভঙ্গের।
বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতেই সুরজিৎবাবু নতুন দায়িত্বে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গেই রাজ্য পুলিশের আরও কয়েক জন আইপিএস অফিসারকে বদলির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এই বদলি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ বার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে সরকারের এই কাজে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে।
বিরোধীদের দাবি, বিধিভঙ্গের অপরাধে নির্বাচন কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। সিপিএমের তরফে রবীন দেব ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তর কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। সে কথা জানিয়ে সুনীলবাবুর বক্তব্য, আজ, শনিবার রবীনবাবুরা লিখিত ভাবে অভিযোগ করবেন। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র আব্দুল মান্নান জানান, তাঁদের দলের তরফে শাকিল আহমেদ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলবেন।
মালদহের ইংলিশবাজার, মুর্শিদাবাদের রেজিনগর এবং বীরভূমের নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন হবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। নিয়মমতো ওই নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির দিন (১১ জানুয়ারি) থেকেই রাজ্য পুলিশের ওই কর্তারা কমিশনের আওতায় রয়েছেন। কমিশনের এক মুখপাত্র জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রশাসনের যে সব ব্যক্তি যুক্ত থাকেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের বদলি করা যায় না। এটাই কমিশনের নিয়ম। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব এডিজি (আইন শৃঙ্খলা)-র। নির্বাচনের কাজেও তাঁর একই দায়িত্ব। ওই পদে ছিলেন সুরজিৎবাবু। নিয়মমতো তিনি ছিলেন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। অথচ কমিশনের আগাম অনুমতি ছাড়াই তাঁকে বদলি করা হয়েছে, যা নিয়মবিরুদ্ধ। এই কাজ নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সামিল। এবং এই বদলির ক্ষেত্রে রাজ্যের নির্দেশ সরাসরি বাতিল করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন।
বদলি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সরাসরি বাতিল করতে বলা ছাড়া আর কী ব্যবস্থা নিতে পারে কমিশন?
ওই মুখপাত্র জানান, ওই তিন কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকারের নির্দেশ কার্যকর করা স্থগিত রাখতে পারে কমিশন। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে কে যাবেন, তা কমিশন নিজেই ঠিক করবে বলে সরকারকে নির্দেশ দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকারের কাছে তিন জন আইপিএসের নামের তালিকা চাইতে পারে কমিশন। সেই তালিকা পছন্দ না হলে আবারও তালিকা চাইতে পারে তারা। এবং সেই তালিকার মধ্যে থেকে নিজেদের পছন্দের এক জনকে ওই পদে নিয়োগ করতে পারে কমিশন। আবার, এই ধরনের আচরণের জন্য সরকারকে ভর্ৎসনাও করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্রটি জানান, গুজরাত-সহ অন্য দু’টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে পরিবার পিছু গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ৬ থেকে বাড়িয়ে ৯ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রকে এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করার নির্দেশ দেয় কমিশন। ভোট শেষ হওয়ার পরে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। ওই মুখপাত্রের কথায়, “শাস্তির বিষয়টি নির্ভর করে কমিশনের সিদ্ধান্তের উপর। তবে এ রাজ্যে নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলাকালীন কমিশনের আগাম অনুমতি ছাড়া পুলিশে এত ব্যাপক রদবদলের নজির অতীতে নেই।”
মান্নান বলেন, “আমরা চাই নির্বাচন কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিক। কারণ, বদলি করার আগে সরকার কমিশনের অনুমতি নিয়েছিল কি না, তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। কমিশনের উপর আমাদের ভরসা আছে। তারা নিশ্চয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, “এই সরকার কোনও ক্ষেত্রেই নিয়ম-কানুনের ধার ধারে না! তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হচ্ছে। এর সঙ্গে এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) পদটি সরাসরি যুক্ত। এখন প্রতিটি কেন্দ্রেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানা অভিযোগ জমা পড়ছে। এমন সময় এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-র বদলির বিষয়টি কমিশনের দেখা উচিত।” রবীন দেবের অভিযোগ, মুখ্য নির্বাচনী অফিসার তাঁকে জানিয়েছেন, বদলির আগে অনুমতি চেয়ে তাঁকে কোনও চিঠি দেয়নি সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.