|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
‘নতুন দরজা দিয়ে নতুন অন্যরকম’ |
কবিতাটির শিরোনাম ‘৮ মার্চ, ২০১০’, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়ের কলমে মেয়েদের নিজস্ব স্বর: ‘আমাদের আঁশ-নিরামিষ কথা
মাদুরকাঠিতে বোনা হতে-হতে,
ফোঁপানি ও খিলখিল,
ছোবল, চুম্বন
রাগমোচনের নীল নকশা তুলেছে।’
তাঁর রাতচরা কয়েকটা কবিতা-য় (একুশ শতক, ৮০.০০) ‘আত্মরতি-র কবিতা’র একটি লাইন:
‘আজ আবার বৃষ্টি ঝরছে অঝোরধারায়। জলের কণাগুলিতে,
ঘাড় ফেরালেই দেখা যায় আমার চূর্ণ মুখচ্ছবি।’
মণীন্দ্র গুপ্তের অমোঘ মন্তব্যটি মনে পড়বেই কবিতা সম্পর্কে: ‘শুধু দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তনেই হয়তো তার শরীর ও আত্মা, আমাদের আকাঙ্ক্ষিত পথে, পালটে যেতে পারে।’ ‘হিতোপদেশ’ প্রবন্ধে আরও বলেছেন মণীন্দ্র গুপ্ত, ‘আমার প্রস্তাব ছিল কবিতার জন্মান্তর, শরীরে ও আত্মায়।’ আলোক সরকারের নতুন কবিতার বই নৈঃশব্দ্যের অন্তর্স্রোত-এ (কবিতীর্থ, ১২৫.০০) যেন সেই কবিতার জন্মান্তর, সে বইয়েরই একটি কবিতার লাইনের মতো: ‘নতুন দরজা দিয়ে নতুন অন্যরকম।’ নিসর্গে সম্পৃক্ত তাঁর কবিতা, নিঃশব্দ কথোপকথন হাওয়ার সঙ্গেও:
‘হাওয়াকে বলি
তুমি তো এক মুহূর্ত থাকো না
তোমার আবার ভালোবাসা।
... আমি সবার কথা ভাবি।
যে ধুলোগুলো উড়ে গেছে
তাদের কথা ভাবি
যে ছায়াগুলো মুছে গেছে
তাদের কথাও ভাবি।’
দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মলিন খৈ-এর (প্রতিভাস, ৭০.০০) কবিতাবলি অভিমান বা বিরহব্যথার মতো গোপন অনুভূতিতে বোনা, গভীর ভালবাসার দিকে মুখ ফেরানো। তাতে ‘আমার বৃষ্টি’ কবিতার অমোঘ স্মৃতি: ‘বৃষ্টির মতো আর কেউ নেই যা আমাকে জ্বরের ঘোরের মধ্যে নিয়ে যায়।’
‘সূর্য তুই যে মাথার উপরে আছিস
এ তো আমরা ভুলে গেছি বহু বহু কাল’,
এমন লাইন লিখতে পারেন অরুণেশ ঘোষ-ই। বেরিয়েছে তাঁর দোঁহাসমগ্র (কবিতীর্থ, ১৫০.০০)।
‘আমি আছি মেঘ হয়ে আঁধারে ছড়িয়ে
জ্যোত্স্নার ছায়ায়।’
— আয়েশা খাতুনের নতুন কবিতার বই নীরব কর্ণফুলি-তে (ছোঁয়া, ৭০.০০) তারুণ্যের প্রখর স্পন্দন। ছোঁয়া-রই এমন আরও কাব্যগ্রন্থ— অভী ভট্টাচার্যের লবণাক্ত চিহ্ন (৬০.০০), সিদ্ধার্থ মজুমদারের বিজড়িত সময় সংলাপ (৮০.০০), সাদেকের জানালাটা খোলা থাক (৬০.০০)।
গৌতম বসু স্বর্ণগরুড়চূড়া-র (সপ্তর্ষি, ৬০.০০) নামকবিতাটির শেষে উচ্চারণ করেন: ‘এই অবধি, এমন অমল, এমন প্রকাণ্ড আকাশ সে যে কেন দেখে নাই!’ পূর্ণের প্রতি অনুসন্ধিত্সু আর একটি কবিতা: ‘অপূর্ণ মন, পূর্ণতায় ফিরে আসে পূর্ণতা।’
আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম নোবেল-পাওয়া কবি ওলে সোইঙ্কার কবিতা-র (কবিতীর্থ, ১০০.০০) অনুবাদ করেছেন উদয় ভাদুড়ী, ভূমিকা-সহ।
‘বিষণ্ণ হওয়ার কিছু নেই
বিষণ্ণতা একটা অপরাধ, একটা কারাগার।
একটা অদ্ভুত ভাবনা, ধূসর ক্যানভাস থেকে
আমি চাদরের মতো উঠে আসি।’
— আনা আখমাতোভা’র একটি কবিতা। ‘রাশিয়াতে প্রায় সবাই এখন তাঁকে পছন্দ করে। গণতন্ত্রীরা পছন্দ করে কারণ তিনি স্তালিন-এর বিরোধী ছিলেন। কমিউনিস্টদের তাঁকে নিয়ে সমস্যা নেই কারণ তিনি খুব বেশি সোভিয়েত বিরোধী ছিলেন না। ...’ লিখেছেন সোমনাথ গুহ তাঁর আনা আখমাতোভা: রাষ্ট্রের খবরদারি ও কবি-তে (ভাষাবন্ধন, ১০০.০০)। কবির সৃষ্টির নির্বাচিত অনুবাদের সঙ্গে কবির রচনার অন্ধিসন্ধি, কবির জীবনের যন্ত্রণাময় ইতিহাসও। |
|
|
|
|
|