|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সুরাহা অধরাই |
যাত্রা-যন্ত্রণা |
দেবাশিস দাস |
ছিল সাকুল্যে একটিই বাস। সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বছর পাঁচেক। অভিযোগ, তার পরে অনেক বার নতুন বাস চালুর কথা শুনেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু একটি রুটেও বাস চালু হয়নি। ফলে বোড়াল, রানিয়া, জয়েনপুর, শ্রীপুর, বাঘের খোল এবং বনহুগলি এলাকার অসংখ্য বাসিন্দার কাছে যাতায়াত এখন নিত্যদিনের দুর্ভোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বিস্তীর্ণ এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা এখন হাতে গোনা কিছু অটো আর সাইকেলরিকশার উপরে নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অটো পাওয়া নির্ভর করে ভাগ্যের উপরে। অটোর জন্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। রাত বাড়লেই রিকশা ভাড়া হাঁকে ইচ্ছেমতো। |
|
মেট্রোর কবি নজরুল এবং মাস্টারদা সূর্য সেন স্টেশন থেকে এই সব এলাকার দূরত্ব তিন কিলোমিটারেরও কম। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, যানবাহনের অভাবের জন্য তাঁরা অধিকাংশ সময়েই মেট্রোর সুফল ভোগ করতে পারেন না। তাঁদের আরও দাবি, সংশ্লিষ্ট মহলে এই সমস্যার কথা জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। এই সব এলাকার অনেক বাসিন্দাই এখনও অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে গড়িয়া কিংবা বাঁশদ্রোণী থেকে নিয়মিত হেঁটে ফিরতে বাধ্য হন।
স্থানীয় বাসিন্দা কল্লোল সেন বললেন, “সবচেয়ে দুর্ভোগ হয় বর্ষায় আর শীতে। একটু রাত হলেই কোনও যানবাহন থাকে না।” এই অঞ্চলের বহু ছেলেমেয়ে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজের পড়ুয়া। তাঁদের অভিযোগ, রোজই নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা দুই আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তে হয়। না হলে যানবাহনের অভাবে ঠিক সময়ে পৌঁছনো যায় না। বাড়ি ফেরার সময়েও একই সমস্যা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জয়েনপুর-অরবিন্দ সেতু রুটের বাসটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে এই দুর্ভোগের কথা জানানো হয়েছে। তবুও সমস্যা নিরসনের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। |
|
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের বিজলি দাস বলেন, “অনেক দিন আগে নতুন হাট পর্যন্ত একটা বাস চালুর কথা শুনেছিলাম। কিন্তু কেন চালু হল না তা বলতে পারব না।” এই এলাকার একটা অংশ সোনারপুর গ্রামীণ অঞ্চলের মধ্যেও পড়ে। এলাকার মানুষের এই দুর্ভোগ নিয়ে প্রসঙ্গে সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের সিরাজ খাঁ বলেন, “আমরা নতুন কিছু বাস চালুর প্রস্তাব দিয়েছিলাম পরিবহণ দফতরের কাছে। কিন্তু সেগুলো বিভিন্ন কারণে আটকে ছিল।” বর্তমান সভাপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তীর কথায়: ‘‘আমায় এই সমস্যার কথা এত দিন কেউ জানায়নি। আমি বিধায়ককে এলাকার এই সমস্যার কথা জানাব।”
সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক এবং বর্তমান উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “ওই এলাকার এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা আমি পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছি।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের কথায়: “ওই এলাকার সমস্যা আমার নজরে এসেছে। আমরা ওই এলাকায় ছোট বাস চালানোর কথা ভাবছি।”
|
ছবি: সুব্রত রায় |
|
|
|
|
|