দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
সঙ্কট চলছেই
চাতকের প্রতীক্ষা
রম আসছে। কপালে ভাঁজ পড়েছে বেহালার কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের। কারণ, জলকষ্টের আশঙ্কা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এ বার শীতেই বেহালার বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি জলকষ্ট হয়েছে। আশঙ্কা, গরমে তা চরমে উঠবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পানীয় জল কিনতেও হতে পারে। প্রতি বছরই এই সমস্যা হয়। বার বার আবেদন করেও সুরাহা হয়নি।
১৩ এবং ১৪ নম্বর বরোর রায়বাহাদুর রোড, মালাকার পাড়া, নিউ আলিপুর, তারাতলা, ভাটিখানা, জ্যোতিষ রায় রোড, বিএল সাহা রোড, শিশিরবাগান, সেনহাটি, চৌরাস্তা, শিমূলতলা, সত্যেন রায় রোড, বামাচরণ রায় রোড, চণ্ডীতলা, মালিপাড়া-সহ নানা এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন।
তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার কলে নিয়মিত জল আসে না। তিন বারের জায়গায় কখনও দু’বার, কখনও এক বার জল আসে। এলেও সরু জল পড়ে। চাপ খুব কম থাকে। লাইনে দাঁড়িয়েও জল পাওয়া যায় না। যদিও কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বেহালার কয়েকটি অঞ্চলে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। তা আমাদের নজরে এসেছে। সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করছি।”
বাসিন্দারা জানান, কলের মুখে পাইপ লাগিয়ে জল টানতে হয়। অনেক সময় অন্য পাড়ার কল থেকে জল আনতে হয়। সেখানেও জল পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তখন জল কেনা ছাড়া বাসিন্দাদের অন্য উপায় থাকে না। তা ছাড়া জলের লাইনে বচসা লেগেই থাকে। অনেক সময় তা হাতাহাতি পর্যন্তও গড়ায়  অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট বরো সূত্রের খবর, এই এলাকাগুলিতে অনেক বেআইনি জলের সংযোগ রয়েছে। বহু চেষ্টা করেও অধিকাংশ সংযোগ চিহ্নিত করা যায়নি। ফলে সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। বাসিন্দা অম্বর রায়ের কথায়: “বাসিন্দাদের একাংশ নিজেদের মতো করে বেআইনি সংযোগ নিয়েছেন। ফলে বেশির ভাগ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন।”
বেআইনি সংযোগের জন্য বেহালায় পানীয় জলের সমস্যার কথা স্বীকার করে ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুশান্ত ঘোষ বলেন, “বেআইনি সংযোগ চিহ্নিত করা খুব কঠিন। তবুও যেখানে খবর পেয়েছি সেখানেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’’ যদিও এই সমস্যার জন্য বেআইনি সংযোগকে দায়ী করতে রাজি নন ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের মানিক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়: ‘‘এখানে কোনও বেআইনি সংযোগ নেই। সার্বিক ভাবে পানীয় জলের উৎপাদন কমে গিয়েছে। তাই এই সমস্যা। আমরা উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।”
অভিযোগ উঠেছে, সমস্যা নিয়ে বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলেই একটি-দু’টি নলকূপ বসিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু সেই নলকূপগুলি কয়েক দিনের মধ্যেই খারাপ হয়ে যায়। কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি বিভাস মাইতি বলেন, “কোনও এলাকা থেকে আমাদের কাছে বেআইনি সংযোগের অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিই।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.