শব্দ-তাণ্ডবে জেরবার কলেজ মোড়
দায় এড়াতে ব্যস্ত পুলিশ-প্রশাসন
পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে বৈঠকে জানানো হয়েছিল, সকলকেই শব্দবিধি মানতে হবে। না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু, কোথায় কী! সমস্ত বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এ বারও উচ্চগ্রামে বক্স বাজল মেদিনীপুরের কলেজ মোড়ের পুজোয়। তার জেরে সমস্যায় পড়লেন পুজো দেখতে আসা মানুষজন। নির্বিকার থাকল পুলিশ-প্রশাসন। অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ দায় ঠেলল প্রশাসনের দিকে, আর প্রশাসন পুলিশের দিকে!
অবস্থাটা ঠিক কেমন?
মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক দীপঙ্কর সন্নিগ্রাহী শুক্রবার সকালে স্কুলে এসে দেখেন, আশপাশে বিকট শব্দে বাজছে সাউন্ড বক্স। আওয়াজের জেরে অনেকে কানে হাত দিয়ে যাতায়াত করছেন। অবস্থা দেখে তিনি কোতয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশীর দ্বারস্থ হন। অভিযোগে জানান, আওয়াজে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। আইসি তখন মহকুমাশাসককে বিষয়টি জানানোর পরামর্শ দেন। সেই মতো মহকুমাশাসকের (সদর) সঙ্গে যোগাযোগ করেন দীপঙ্করবাবু। তখন মহকুমাশাসক বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন।
শব্দ তাণ্ডবের প্রতিবাদে। —নিজস্ব চিত্র।
ওই শিক্ষক বলেন, “এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম। পুলিশ বলছে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে, আর প্রশাসন বলছে পুলিশ। আমরা তবে যাব কোথায়?” তাঁর কথায়, “কলেজ মোড়ের অদূরেই থানা। সব কিছু দেখেও পুলিশ কী এ ভাবে চুপ করে বসে থাকতে পারে? প্রশাসনের কী কিছুই করার নেই?” এ সব প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি কোতয়ালি থানার আইসি এবং মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্তের কাছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকুমার সাইনি অবশ্য বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে পদক্ষেপ করা হত।” তবে, কলেজ মোড়ের কিছু পুজো কমিটি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। খোদ কলেজিয়েট স্কুল ক্যাম্পাসের পোস্টারে লেখা ‘শব্দদূষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন’।
কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজো দেখার জন্য অনেকেই বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন। শহর ও তার আশপাশ থেকে বহু মানুষ আসেন। রাজনীতির হাতে গরম খবরই এই পুজোর মূল আকর্ষণ। এলাকায় সব মিলিয়ে প্রায় ২০টি পুজো হয়। প্রতিটি পুজোর সঙ্গেই জড়িয়ে থাকেন কোনও না কোনও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুজো মণ্ডপগুলোতে বিভিন্ন মডেল থাকে। কোনওটা মাটির তৈরি, কোনওটা প্লাইউডের। পাশে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য। তা দেখতেই ভিড় জমে সবচেয়ে বেশি। এই সব নিয়ে বিতর্কও হয়। এ বার যেমন টিএমসিপি প্রভাবিত ‘অগ্নিকন্যা’ ক্লাবের ব্যাঙ্গাত্মক মডেল কুরুচিকর বলে অভিযোগ সিপির। এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানানো হয়েছে। সিপির জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুলের অভিযোগ, “এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যে ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, সেটি কুরুচিকর।” অন্য দিকে, ওই ক্লাবের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা টিএমসিপির মেদিনীপুর শহর সভাপতি বুদ্ধ মণ্ডলের পাল্টা মন্তব্য, “মন্ত্রীর কার্টুন তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রুচি-কুরুচির প্রশ্ন আসে কী করে? অন্য ক্লাবও তো কত নেতা-মন্ত্রীকে নিয়ে কার্টুন তৈরি করেছে। তার বেলা!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.