তিন বছরেও বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবস্থা চালু করতে পারল না উলুবেড়িয়া পুরসভা। অথচ, সেই ব্যবস্থার জন্য তিন বছর আগে কেনা লক্ষাধিক বালতি পড়ে থেকে রোদে-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে পুরভবনের ছাদে। পরিকাঠামো না গড়ে এ ভাবে বালতি কেনার সিদ্ধান্ত আসলে বলেই মনে করছেন পুরকর্মীদের একাংশ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, একমাত্র বাজার এলাকাগুলি থেকে আবর্জনা নিয়ে যায় পুরসভার গাড়ি। পুরবাসীরা যাতে রাস্তায় আবর্জনা না ফেলেন, সেই কারণে বাড়ি থেকে তা সংগ্রহের জন্য ২০১০ সালের মার্চ মাসে এক কোটি টাকায় লক্ষাধিক বালতি কেনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পরিচালিত উলুবেড়িয়া পুরসভা। ঠিক হয়, প্রতিটি বাড়িতে দু’টি করে বালতি দেওয়া হবে। একটিতে পচনশীল এবং অন্যটিতে সাধারণ আবর্জনা ফেলার জন্য। সপ্তাহে একদিন পুরসভার সাফাইকর্মীরা গিয়ে জমানো আবর্জনা গাড়িতে তুলে নিয়ে আসবেন। |
প্রথম দিকে কয়েকটি ওয়ার্ডে কিছু বালতি বিলিও করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। ২০১০ সালের অগস্ট মাসে তত্কালীন পুরপ্রধান কংগ্রেসের সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। নতুন পুরপ্রধান হন তৃণমূলের দেবদাস ঘোষ। কিন্তু বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবস্থা আর চালু হয়নি।
কেন চালু হল না ওই ব্যবস্থা? প্রাক্তন পুরপ্রধান বলেন, “আমরা প্রক্রিয়াটা শুরু করেছিলাম। বালতি বিলির পরে আবর্জনার গাড়ি কেনারও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পুরবোর্ডে তৃণমূলের গোলমালের জন্য সব বালতি বিলি করা যায়নি।” পুরভবনের ছাদে জমা বালতি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পুরসভার বিরেধী দলনেতা সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বর্তমান পুরপ্রধান দেবদাস ঘোষ। শীঘ্রই বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবস্থা চালুর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পুরপ্রধান বলেন, “কাউন্সিলরদের বালতিগুলি বিলি করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই পাড়ায় পাড়ায় বড় প্লাস্টিকের ড্রাম বসানো হবে। বালতিতে জমানো আবর্জনা বাসিন্দারা সেখানে ফেলবেন। সপ্তাহে এক দিন সাফাইকর্মীরা গিয়ে সেই ড্রাম থেকে ময়লা তুলে আনবেন।”
দিন কয়েক আগে পুরপ্রধান কাউন্সিলরদের বালতি বিলির কথা বললেও এখনও তা শুরু হয়নি। অনেক কাউন্সিলরই এতে উত্সাহ দেখাচ্ছেন না। তাঁরা মনে করছেন, আগে পাড়ায় পাড়ায় ড্রাম বসানো হলে তার পরে বালতিগুলি বিলি করা সহজ হবে। পুর এলাকার বাসিন্দারাও সচেতন হবেন। |