উপচে পড়ছে জঞ্জাল। বেরোচ্ছে দুর্গন্ধ। আস্তাকুঁড় ঘেটে খাবার সংগ্রহ করতে রাস্তার ওপরে চলছে কুকুরদের কামড়াকামড়ি। আবার একই ভাবে ভ্যাট থেকে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে গরুর সঙ্গে শিং ঠেকিয়ে হামেশা গরুর লড়াই রাস্তায় যানজট তৈরি করছে।
জামশেদপুরের সাকচির টিনাশেড বাজারের রাস্তার চেহারাটা এমনটাই। কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবের কারণে একটি ব্যস্ত রাস্তার এ হেন চেহারা বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, ভ্যাটটি ওই জায়গা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, টিনাশেড বাজারের ওই রাস্তাটি জনবহুল। রাস্তাটি খুব একটা চওড়াও নয়। রাস্তা দিয়ে একই সঙ্গে লোক জন যাতায়াত করেন। আবার গাড়ি চলাচলও করে। যার ফলে ভ্যাটের আশপাশে যখন গরু কিংবা ষাঁড় জড়ো হয় তখন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাটাই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। |
আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়ানোর চেয়েও যেটা ওই এলাকার বেশি সমস্যা, তা হল গরু কিংবা ষাঁড়ের লড়াই। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, কাঁচা শাক-সব্জি কিংবা আনাজের খোসা খেতে ভ্যাটের সামনে জড়ো হয় গরু কিংবা ষাঁড়ের দল। রাস্তার মাঝে শিং উঁচিয়ে কখনও তারা একে অন্যের দিকে তেড়ে যায়। লড়াই শুরু করে। যার জেরে রাস্তায় গাড়ি চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকায় মধু নায়েকের সিডি-র দোকান। তাঁর অভিযোগ, “দুর্গন্ধ তো আসেই। কিন্তু বেশি সমস্যা ষাঁর আর গরুর উপদ্রব। আমরা অনেকবার এই নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুফল হয়নি।” গহনার দোকানের মালিক বিজু পালের অভিযোগ, “ষাঁড়ের আক্রমণে অনেকে আহতও হয়েছেন। বিশেষত পথ চলতি বাইকআরোহীরা এই ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হামেশাই হন।” টিনাশেড বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, এলাকায় পরিষেবাদানকারী সংস্থা, টাটা স্টিলের কাছে এই সমস্যার সমাধানে অনেক বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এমনকী পূর্ব সিংভুম জেলার ডেপুটি কমিশনারকেও সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যেহেতু সাকচি বাজার এলাকাটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে, তাই সরকারি তরফে এখানকার সমস্যার সমাধানে বিশেষ গুরুত্বই দেওয়া হয় না। যদিও পূর্ব সিংভূম জেলা প্রশাসন তা মানতে চায়নি। জেলার ডেপুটি কমিশনার হিমানি পাণ্ডে বলেন, “আমার সঙ্গে এই নিয়ে কেউ কোনও কথা বলেননি। আগে কী হয়েছিল আমি জানি না। যদি ওই এলাকার মানুষ নিজেদের সমস্যা নিয়ে আসেন তবে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অনেকটা একই সুর শোনা গিয়েছে টাটা স্টিল কর্তৃপক্ষের গলাতেও। সংস্থার কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান প্রভাত শর্মা বলেন, “বোধহয় কোনও ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। কোনও সমস্যা হলে তার সমাধান না করার তো কোনও কারণ নেই।” |